Logo

সারাদেশ

মানিকগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে অতিরিক্ত টাকা না দিলে হয়রানি

Icon

আফ্রিদি আহাম্মেদ, মানিকগঞ্জ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১:৩৬

মানিকগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে অতিরিক্ত টাকা না দিলে হয়রানি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে নির্ধারিত সরকারি ফি দিয়ে আবেদন করলেই পড়তে হচ্ছে নানা হয়রানির মুখে। আর দালালের ‘চ্যানেল ফি’ হিসেবে অতিরিক্ত ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা দিলেই দ্রুত মিলে যাচ্ছে পাসপোর্ট।

৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পাসপোর্ট অফিসের আশপাশে অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি কম্পিউটার দোকানে সক্রিয়ভাবে দালালচক্র কাজ করছে। এসব দোকানের কর্মীরা দালালের ভূমিকায় সেবাপ্রার্থীদের ভুল ধরে তাঁদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন।

পাসপোর্ট অফিসের ভেতর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রায় সব কর্মকর্তার নিজস্ব 'চ্যানেল' রয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। এসব চ্যানেল ব্যবহারে রয়েছে সংকেত, কমন ই-মেইল অথবা ফোনে ছবি পাঠানোর মতো পদ্ধতি। এভাবে চাহিদামতো টাকা দিলে জটিলতা ছাড়াই আবেদন অনুমোদন হয়ে যাচ্ছে।

সরকার নির্ধারিত ফি অনুযায়ী ৪৮ পাতার ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি ৫,৭৫০ টাকা। অথচ দালালের মাধ্যমে করলে দিতে হচ্ছে ৭,৫০০ থেকে ৯,০০০ টাকা পর্যন্ত।

সরকারি ফি দিয়েই পাসপোর্ট করতে চাইলে নানা কাগজপত্র ও যাচাইয়ের কথা বলে আবেদন ফেরত দেওয়া হয়। অথচ চ্যানেল ফি দিলে শুধুমাত্র ভোটার আইডি ও চেয়ারম্যানের সনদই যথেষ্ট।

দালালরা জানান, ‘চ্যানেলের মাধ্যমে আবেদন করলে শুধু ১৫০০ টাকা বাড়তি দিতে হয়। বিনিময়ে কোনো ভোগান্তি হয় না। অফিসের লোকেরাও সব জানে।’

আবেদনপত্র জমা নেওয়ার ক্ষেত্রেও পার্থক্য চোখে পড়ে। সাধারণ আবেদন দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত গ্রহণ করা হলেও চ্যানেল ফি দেওয়া আবেদন বিকেল ৪টা বা ৫টা পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়।

একাধিক সেবা গ্রহীতা বলেন, অতিরিক্ত টাকা দিয়েই পাসপোর্ট করতে হয়েছে, না হলে অনেক ঘোরাঘুরি করতে হতো। কেউ কেউ আনসার সদস্যদেরও টাকা দিয়ে আবেদন করিয়েছেন বলে জানান।

রূপসা গ্রামের প্রবাসী মো. রহিজ বলেন, ‘৮ হাজার ৫০ টাকা সরকারি ফি হলেও আমাকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। দালাল ছাড়া সম্ভব নয়।’

কম্পিউটার দোকানদাররা জানান, ‘উপরে-নিচে সবাই জানে। আমরা কোড দিয়ে দিই, ইমেইল বা ছবি পাঠিয়ে দিই— তাহলেই হয়।’

এ বিষয়ে আনসার সদস্য উৎপল বলেন, ‘অনেকে বুঝতে পারেন না, আমি সাহায্য করি।’

এ বিষয়ে সুজন মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, ‘যারা অনিয়ম করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক অরূপ রতন চাকী বলেন, ‘আপনি বললেন, আমি দেখব। তবে এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জনদুর্ভোগ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর