উপস্থিতির খাতা ফাঁকা, শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক বেশি
রাজাপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুরবস্থা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১:৪৪
-6869484c18153.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয়জন।
অথচ এই ছয় শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছেন পাঁচজন শিক্ষক। এমন বৈসাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয়ে নেই সঠিক পাঠদানের পরিবেশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির চারজন শিক্ষার্থীকে একজন শিক্ষক পরীক্ষা নিচ্ছেন। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী একটি শ্রেণিকক্ষে বসে গল্প করছে। সেখানে কোনো শিক্ষক নেই। চারজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও পাঠদানে সক্রিয়তা দেখা যায়নি।
দুপুর ২টা ১৫ মিনিটেও প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির উপস্থিতি খাতায় শিক্ষার্থীদের নাম লেখা হয়নি। পরে শিক্ষকরা তড়িঘড়ি করে খাতা পূরণ করেন।
বিদ্যালয়ের খাতায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে ৫১ জন। কিন্তু স্থানীয়দের মতে, প্রতিদিন গড়ে ১০–১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে।
বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম থাকলেও তা চালু হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম সরকারি ল্যাপটপ বাসায় রেখে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। এছাড়া শিক্ষকরা দাপ্তরিক সময় অনুসরণ না করে ইচ্ছেমতো ছুটি দিয়ে বিদ্যালয় বন্ধ রাখেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম বলেন, ‘আজ হয়তো কিছু খাতায় উপস্থিতি লেখা হয়নি। মাল্টিমিডিয়া ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। ল্যাপটপ ঈদের ছুটির পর আনতে দেরি হয়েছে।’
রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, ‘ল্যাপটপ অবশ্যই বিদ্যালয়ে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি রেজিস্টারে ঠিকমতো লিপিবদ্ধ করাও বাধ্যতামূলক। বিষয়টি তদন্ত করে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ্র বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এআরএস