Logo

সারাদেশ

ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর, বন্যার আশঙ্কা

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১৬:৫৫

আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ২২:০৫

ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর, বন্যার আশঙ্কা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

ফেনীতে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীর বাঁধে ৪টি স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ফলে যেকোনো সময় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ফেনী পানি উন্নয়ন বিভাগ।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেনী আবহাওয়া অফিস।

গতকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির কারণে শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, ডাক্তারপাড়া, মিজান রোড, কলেজ রোড, একাডেমি রোড, রামপুর শাহীন একাডেমি এলাকা, পাঠানবাড়ি এলাকা, নাজির রোড, পেট্রোবাংলাসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পানি নামছে ধীর গতিতে।

টানা বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে স্কুল, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সড়কে রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন কম থাকায় পয়ে হেঁটে লোকজনকে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার জানান, মঙ্গলবার বিকেলে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সিলোনিয়া নদীর পানিও পরশুরামে বিপৎসীমায় পৌঁছে গেছে। মুহুরী নদীর চারটি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে। অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, ফেনীতে সোমবার (৭ জুলাই) থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে। এটি এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে এমন বৃষ্টিপাতকে ‘স্বাভাবিক’ উল্লেখ করে আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানান, আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ২২২ মিলিমিটার, পটুয়াখালীতে ১১০ মিলিমিটার, মাইজদীকোর্টে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গতকাল সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে ১৫৭ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের এলাকায় এই মুহূর্তে একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে। এই লঘুচাপের কারণেই মৌসুমি বায়ু এখন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয়, অন্যান্য জায়গায় মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর বর্ধিতাংশ এখন ভারতের রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্তও বিস্তৃত। ফলে দেশের সকল বিভাগের কোথাও না কোথাও এখন হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

অন্যদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, সাঙ্গু, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, এসব নদীর পানির মাত্রা আগামী এক দিন বৃদ্ধি পেয়ে পরে স্থিতিশীল হতে পারে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বন্যা-প্রবণ সময় হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জুলাই হলো সবচাইতে বেশি বৃষ্টি-প্রবণ মাস। এই সময়ে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং নদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতা বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। গতবছর আগস্টে নজিরবিহীন বন্যা হয়েছিল দেশে। তখন বিভিন্ন জেলায় কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রাণহানিও হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বন্যা আবহাওয়া

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর