টাঙ্গাইল
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে অর্থ লুট, ধরাছোঁয়ার বাইরে ‘মূলহোতা’

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬

বরখাস্ত তিন কর্মকর্তাসহ অভিযুক্ত ‘মূলহোত’ শামীম আল আজাদ | ছবি : সংগৃহীত
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বাড়িতে ঢুকে নগদ প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুটের অভিযোগে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়। পরদিন (৮ জুলাই) বিকেলে জেলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন, পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।
তবে, অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ‘মূলহোত’ শামীম আল আজাদের (সহকারী উপ-পরিদর্শক) বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী সালেহা বেগম ও স্থানীয়রা। জানা যায়, লুটের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সহকারী উপ-পরিদর্শক শামীম আল আজাদ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর তাকে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় সংযুক্ত করা হলেও তিনি যোগদান করেননি। এদিকে, প্রসিকিউশন শাখায় যোগদান না করায় শামীম আল আজাদকে জেলা অফিসের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
অন্যদিকে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ স্বাক্ষরিত এক অফিসে আদেশে বলা হয়, ভূঞাপুর পৌর এলাকার সাবেক কাউন্সিলর সালেহা বেগমের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সালেহা বেগম অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, গত ১৮ জুন সকালে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে প্রথমে আমার বাড়িতে ঢুকে গাড়ির তেলের খরচ চেয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। তখন ১০ হাজার টাকা দিই। পরে আবার ফিরে এসে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে তল্লাশির নামে ঘরে তছনছ করে আলমারি থেকে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ও ছেলের ঘর থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আমাদের হুমকি দেওয়া হয় এবং ভিডিও জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- আব্দুল লতিফ তালুকদার/এটিআর