ফরিদপুরে দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েক গ্রামে মাদকের ছড়াছড়ি

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১৯:২১

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলাকে বিভক্ত করে রেখেছে বারাশিয়া নদী। এই দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় মাদকের ছড়াছড়ি ব্যাপক হারে বেড়েছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, যেন হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। এলাকার বহু তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এখন মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য অনেকে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাটিগ্রাম, মহিষারঘোপ, বিদ্যাধর ও বারইপাড়া— এসকল গ্রামগুলো বারাশিয়া নদীর বেড়িবাঁধের পাশে অবস্থিত। এসব গ্রামের বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ মাদক বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছেন। আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মাদকসেবীরা এসব এলাকা থেকে মাদক কিনে নিয়ে যায়। অনেকে আবার বেড়িবাঁধ কিংবা বিভিন্ন পরিত্যক্ত বাড়িতে বসেই মাদক সেবন করে চলে যায়। অনেক সময় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করতে এলে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে কাশিয়ানী থানা এলাকায় চলে যায়।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর পুলিশ প্রশাসন আগের মতো সক্রিয় হতে পারেনি। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে মাদক কারবারিরা। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযানে একজন মাদক বিক্রেতা আটক হয়। এতে অনেক কারবারি গাঁ ঢাকা দিয়েছে। তবে থেমে নেই তাদের কারবার। কৌশল পরিবর্তন করে তারা আবারও নেমে পড়েছে মাদক বেচাকেনায়। বর্তমানে এসব এলাকায় গাঁজা ও ইয়াবার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে।
জাটিগ্রাম এলাকার এক সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে প্রায়ই মাদকসেবীরা আড্ডা দেয়। আমরা সংখ্যালঘু পরিবারের লোক হওয়ায় ভয়ে তাদের কিছু বলতে পারি না।
একই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় শীর্ষ এক মাদক কারবারি আছে। তার জন্য এলাকায় এখন মাদকে ছয়লাব হয়ে গেছে। প্রতি সপ্তাহে সে লাখ লাখ টাকার মাদক বিক্রি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিষারঘোপ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় পরিত্যক্ত সাহা বাড়িতে সন্ধ্যা নামলেই মাদকসেবীদের আড্ডা জমে। এদের কারণে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় লাগে।
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজালাল আলম বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় সোচ্চার আছি। ওইসব এলাকায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ওই এলাকা থেকে একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মাদক ব্যবসা নির্মূলে আরও কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।’