কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩২
-(11)-6875cbe86d8df.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ৫ ঘণ্টা তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। এদিকে কলেজের হল গুলো থেকেও শিক্ষার্থীদের পদত্যাগ আন্দোলনে যোগ দিতে দেখা গেছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ডিগ্রি শাখার ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা এক সংলাপে বসেন। এ সময় আশ্বাসমূলক বক্তব্য ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয় শিক্ষার্থীরা। পরে সংলাপ ভেঙে অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষক বের হয়ে আসেন। এ সময় ‘এক দফা এক দাবি, অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই’ স্লোগান তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
রাত ৮টায় সরজমিনে কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের মসজিদের ভেতর অধ্যক্ষসহ আরো কয়েকজন শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় অধ্যক্ষ মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে বের হতে দেননি শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা ৯ দফা জানায় এবং দুই কার্যদিবস সময় দেয় কলেজ প্রশাসনকে। দুই কার্যদিবসে দাবি না মানায় সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১২টায় কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগানে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দেয়া ৯ দফা দাবি হলো- কলেজে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন, ডিগ্রি শাখার জন্য পৃথক ও আধুনিক ক্যাম্পাস স্থাপন, সিসিটিভি ক্যামেরা ও পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার, বহিরাগত, মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বাস ও মাইক্রোবাস সার্ভিস চালু, আবাসিক হল ও আশপাশের হোটেল এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসন, সুপেয় পানি, আধুনিক ওয়াশরুম এবং যুগোপযোগী শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আলাদা ফান্ড গঠন, কলেজের সব ধরনের আয়ব্যয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মফিদুল হাসান পল্লব বলেন, ‘এই কলেজে আমরা গেলে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে পারি না। অধ্যক্ষ স্যার দরজায় তালা দেন। প্রশাসনের কাছে যাওয়ার আগে কাউকে নিয়ে যেতে হয়। এটা কেমন গণতান্ত্রিক পরিবেশ?’
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফয়জুন্নেসা হলে শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করা হয়। হলের ফেসবুক গ্রুপের এডমিন হিসেবে কোনো শিক্ষক থাকেন-এটা প্রথম শুনলাম! মেয়েরা কথা বললে তাদেরকে শোকজ, অভিভাবক ডাকায়, বৈঠকের ভয় দেখানো হয়। নয় দফার কোনো দাবিই মানা হয়নি। বরং আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় রাখা হচ্ছে। তামিমের ওপর ছাত্রলীগের হামলার এক বছর পার হলেও প্রশাসন তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। এটা সবার সামনে ঘটেছে, মিডিয়াতেও এসেছে। তাহলে এত গোপনীয়তা কেন?’
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা বলেন, ‘হলে পানি নেই। কথা বললেও সমাধান নেই। নয় দফা দাবি জানিয়েও সমাধান নেই। তাই আমরা ওনাকে (অধ্যক্ষ) চাই না। তিনি এক বছরেও তামিম নির্যাতনের বিচার করতে পারেননি। যারা নির্যাতন করেছে তাদের শাস্তি দিতে পারেনি। অথচ আমাদের বহিষ্কার করবে বলে হুমকি দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঁঞা বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। পরে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
- সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/এমআই