স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত কাঠের সেতুতে ১০ গ্রামের মানুষের মেলবন্ধন

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৯
-(15)-6875ddf432dd4.jpg)
স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত কাঠের সেতু। ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পুরোনো সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় চার মাস ধরে চরম দুর্ভোগে ছিলেন দশ গ্রামের মানুষ। তবে সরকারি সহায়তার অপেক্ষা না করে নিজস্ব অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু নির্মাণ করে নতুন করে যোগাযোগের দ্বার খুলে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
রোববার (১৩ জুলাই) শেষ হয় কাঠের সেতু নির্মাণ কাজ। শ্রীপুর পৌরসভার বংশিঘাটা এলাকায় নির্মিত এই সেতুটি এখন শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ও মাওনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষকে সংযুক্ত করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পুরোনো বাঁশের তৈরি সাঁকোটি প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তবে দুই মাস আগে সেটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভেঙে পড়লে চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়। বারবার স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনো ফল না পেয়ে নিজেরাই উদ্যোগ নেন।
গ্রামবাসীর সহযোগিতায় গত শুক্রবার শুরু হয় সেতু নির্মাণের কাজ। প্রায় ৫০-৬০ জন শ্রমিক ও স্থানীয় মানুষ দুই দিন ধরে কাঠ ও শ্রম দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করেন। শনিবার রাতেই কাঠের সেতুর কাজ শেষ হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল সরকার জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দুর্গন্ধযুক্ত পানি পার হয়ে কাজে যেতেন। তাই আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেই এটি সংস্কার করার। আমি নিজের কাঠ চেরাই কল থেকে কাঠ সরবরাহ করেছি।
আরেক বাসিন্দা আরাফাত বেপারী বলেন, সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করেন। তাই আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে একত্রিত হয়ে এটি তৈরি করি।
শ্রমিক শফিকুল ইসলাম জানান, কারখানায় যাওয়া, বিরতিতে বাসায় ফেরা বা ছুটির পর ঘরে ফেরার সময় আমরা তীব্র দুর্ভোগে পড়তাম। এখন কাঠের সেতু তৈরির ফলে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম বলেন, মানুষের ঐক্য ও মানবিকতা প্রমাণ করে দিয়েছে-চাইলেই কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। তবে জনদুর্ভোগ কমাতে পৌর কর্তৃপক্ষের আরও দ্রুত এগিয়ে আসা উচিত ছিল।
এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী শাহেদ আক্তার বলেন, ‘স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু নির্মাণ সত্যিই প্রশংসনীয়। স্থায়ী সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। যেহেতু এটি ব্যয়বহুল, তাই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’
- আতাউর রহমান সোহেল/এমআই