Logo

সারাদেশ

হাড়িভাঙ্গার রাজত্বে বিদেশি আমের চ্যালেঞ্জ

Icon

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫৬

হাড়িভাঙ্গার রাজত্বে বিদেশি আমের চ্যালেঞ্জ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রংপুর অঞ্চলের অর্থনীতিতে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম ছিল একসময় রাজা। অতুলনীয় স্বাদ, সুগন্ধ ও আঁশবিহীন গঠনের কারণে দেশজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই জিআই পণ্য বহুদিন ধরে আম চাষের প্রধান ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত ছিল।

উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের কৃষক নফল উদ্দিন পাইকারের হাত ধরে এই আমের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়। এরপর রংপুর জুড়ে গড়ে ওঠে হাজার হাজার হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান। বদলে যায় এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র।

তবে সময়ের পরিবর্তনে এখন দৃশ্যপট বদলেছে। হাড়িভাঙ্গার একক রাজত্বে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বিদেশি জাতের আম। রংপুরের বিভিন্ন উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গৌরমতি, ব্যানানা আম, কাটিমন, কিউজাই, চেংমাই, ব্রুনাই কিং, বারি-৪, সূর্য ডিম ও রেড পালমার জাতের আম।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে হাড়িভাঙ্গার উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় এর বাজারমূল্য পড়ে গেছে। অধিক সরবরাহের ফলে অনেকে লোকসানের মুখেও পড়ছেন। তাছাড়া হাড়িভাঙ্গা আমের সংরক্ষণক্ষমতা মাত্র ৩-৪ দিন, যা বিপণন ব্যবস্থায় বড় চ্যালেঞ্জ।

যদিও এটি একটি স্বীকৃত জিআই পণ্য, কিন্তু এর বিপণন ও সংরক্ষণে যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় হতাশ হচ্ছেন আমচাষিরা।

বর্তমানে যে জাতগুলোর চাষ বাড়ছে সেগুলোর স্বাদ যেমন ভালো, তেমনি দীর্ঘদিন সংরক্ষণযোগ্য। বাজারদরও তুলনামূলক বেশি, ফলে লাভের সম্ভাবনাও বেশি—এমনটাই জানালেন স্থানীয় চাষিরা।
তারা বলছেন, বৈচিত্র্য আনা গেলে ঝুঁকি কমে, লাভ বাড়ে।

হাড়িভাঙ্গা চাষিরা অবশ্য এখনো এই ঐতিহ্য রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। তাদের দাবি, প্যাকেজিং, ঠান্ডা সংরক্ষণ ও আন্তর্জাতিক প্রচারণার মাধ্যমে হাড়িভাঙ্গা আমকে আবারও সেরা অবস্থানে নেওয়া সম্ভব।

অন্যদিকে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এক জাতের ওপর নির্ভর না করে চাষে বৈচিত্র্য আনলে কৃষকের আর্থিক নিরাপত্তা বাড়বে।

মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদিন বলেন, ‘আমরা হাড়িভাঙ্গার ঐতিহ্য ধরে রেখে চাষিদের উচ্চফলনশীল ও রপ্তানিযোগ্য জাতের আম চাষে উৎসাহ দিচ্ছি। এসব জাত দেরিতে পাকে, সংরক্ষণযোগ্যতা বেশি, বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা আমরা নিয়মিত দিচ্ছি।’

রাখিবুল হাসান রাখিব/এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর