-6878aba1271ab.jpg)
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে জেলাজুড়ে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে শহরটি থেকে নতুন করে আরও ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট আটকের সংখ্যা ২০ জনে দাঁড়াল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. রুহুল আমিন সরকার। তিনি বলেন, বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত তাদের আটক করা হয়েছে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ জানায়, এখন পর্যন্ত (দুপুর ১টা) পর্যন্ত সেনাবাহিনী আটক করেছে ১৫ জন। পুলিশ আটক করেছে ৫ জন। এ নিয়ে মোট ২০ জন আটক আছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান।
এদিকে, চলমান কারফিউয়ে জেলায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সকালে শহর ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাঘাট ও বাজার একদমই জনশূন্য। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ।
এর আগে, বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির পূর্বঘোষিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দলটির অভিযোগ, সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের মঞ্চে হামলা চালিয়ে চেয়ার ও ব্যানার ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় পুলিশের একাংশ ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
সমাবেশ শেষে ফেরার পথে শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় ফের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গুলিতে অন্তত চারজন নিহত হন এবং ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাজমুল হুদা।
নিহতরা হলেন, দীপ্ত সাহা (২৫), রমজান কাজী (১৮), ইমন তালুকদার (২৮) ও সোহেল রানা (৩৫)। তাদের লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। গুলিবিদ্ধ ১০ জনের অস্ত্রোপচার চলছে।
নিহত দীপ্ত সাহার চাচা জানান, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে দোকানে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন। নিহত রমজানের বাবা কামরুল কাজী বলেন, আমার ছেলের কী দোষ ছিল? কেন তাকে মেরে ফেলা হলো?
এ ঘটনায় (বুধবার সন্ধ্যায়) গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. গোলাম কবিরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁরা কথা বলতে রাজি হননি। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানও ফোন ধরেননি।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, কিন্তু আমরা গিয়ে উল্টো চিত্র দেখি। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক ছিলেন। পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তখন নিষ্ক্রিয় ছিল।
- ডিআর/এটিআর