Logo

সারাদেশ

গাইবান্ধায় বাসা-বাড়িতে ‘ব্যাঙের ছাতার মতো’ ক্লিনিক-হাসপাতাল

Icon

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ১১:২৮

গাইবান্ধায় বাসা-বাড়িতে ‘ব্যাঙের ছাতার মতো’ ক্লিনিক-হাসপাতাল

সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে গাইবান্ধায় বাসাবাড়ির ভেতরেই গড়ে উঠছে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। দালালচক্রের ওপর নির্ভরশীল এসব প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা।

সরেজমিনে গাইবান্ধা পৌরসভার হাসপাতাল রোডের যমুনা ক্লিনিক, মুন এন্ড ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল, খন্দকার ক্লিনিক, কাণিজ ফাতেমা, মাদার কেয়ার হসপিটাল, প্রাইম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বিভিন্ন হাসপাতালে এমন চিত্র দেখা যায়।

এ ছাড়া জেলা সরকারি হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যেই অন্তত ২০–৩০টি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা সরকারের নির্ধারিত নীতিমালার পরিপন্থী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাস্থ্য বিভাগের তদারকির অভাবে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে এসব অননুমোদিত ও পরিবেশবিধিবহির্ভূত প্রতিষ্ঠান।

তারা বলছেন, বাসাবাড়িতে যে ধরনের ক্লিনিক চলছে, তা দেখে ভয় লাগে। ভেতরে কী হয়, কোনো সঠিক তদারকি নেই। প্রশাসনের উচিত এসব এখনই বন্ধ করা।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, একটি ১০ শয্যার ক্লিনিকের অনুমোদনের জন্য ৮০০ বর্গফুটের ওয়ার্ড স্পেসসহ অন্তত ১৩টি নির্ধারিত কক্ষ এবং আলাদা টয়লেট, পর্যাপ্ত জনবল, যন্ত্রপাতি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ থাকা বাধ্যতামূলক। এর সঙ্গে থাকতে হবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, অনুমোদিত ওষুধ ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স।

তবে বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেশিভাগ প্রতিষ্ঠানেরই নেই পর্যাপ্ত কক্ষ, প্রশিক্ষিত জনবল বা লাইসেন্স। এমনকি অনেক ক্লিনিকে দেখা যায়নি অস্ত্রোপচার রুম, ইনস্ট্রুমেন্ট রুম, স্টেরিলাইজার বা আইপিএসের সঠিক ব্যবস্থাও।

এ বিষয়ে যমুনা ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতালের মালিক মো. সোহেল রানা বলেন, আমরা সব নিয়ম মেনে চলি। তবে একটা বিষয় আমাদের নজরে পড়ছে, যারা এ ব্যবসার সাথে নতুনভাবে জড়িত হচ্ছে তারা নিয়ম মানছে না। যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই ব্যবসা পরিচালিত করছে।

পালাস ক্লিনিকের ম্যানেজার মো. আব্দুল রাজ্জাক বলেন, গাইবান্ধা জেলায় এখন অলিতে-গলিতে এমন অবৈধ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। যারা আইন মানছেন না, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বিপ্লব জানান, আমাদের অ্যাসোসিয়েশনে ১৬টি হাসপাতাল ও ৭৭টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সদস্য হিসেবে নিবন্ধিত। যথাযথ কাগজপত্র আছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকেই সদস্য করা হয়।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. রফিকুজ্জামান বলেন, রেজিস্ট্রেশন ও নবায়নবিহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রাখার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে। এ ছাড়া অনুমোদন ছাড়া যেগুলো রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত।

  • আতিকুর রহমান/এটিআর
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর