মানবপাচারে নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান চান স্ত্রী

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৭

নীলফামারীতে মানবপাচারে নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান চান স্ত্রী। ছবি : বাংলাদেশের খবর
নীলফামারীতে মানবপাচারের শিকার হয়ে নিখোঁজ স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বাদশার সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্ত্রী শিউলি আকতার।
রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে নীলফামারী প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বামীকে উদ্ধারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
শিউলি আকতার নীলফামারী সদর উপজেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
শিউলি আকতার জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রীসে পাঠানোর কথা বলে জাহাঙ্গীর আলম বাদশাকে পাকিস্তানে নিয়ে যান শহরের সবুজপাড়ার মতিয়ার রহমানের ছেলে মাহবুবুর হোসেন (৪৫)। তার সঙ্গে আরও ছিলেন শহরের বারইপাড়ার সুফিয়ান ইসলাম, ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট এলাকার আব্দুল মান্নান ও ডোমার উপজেলার মেলা পাঙ্গার ওমর ফারুক।
বাদশার সঙ্গে আরও নিয়ে যান জেলা শহরের বারইপাড়ার সুফিয়ান ইসলাম, ডিমলা উপজেলা সদরের বাবুরহাট এলাকার আব্দুল মান্নান ও ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মটকপুর ইউনিয়নের মেলাপাঙ্গা এলাকার ওমর ফারুক।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গ্রীসে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তাদের পাঠানো হয় পাকিস্তানে। সেখান থেকে চার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। প্রতারক মাহবুবুরকে চার পরিবার থেকে ৪০ লাখ টাকা দেওয়া হলেও তিনজন দেশে ফিরে এলেও এখনো দেশে ফিরতে পারেননি জাহাঙ্গীর আলম বাদশা। তাকে নিয়মিত নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।
বাদশার মা হাসিনা বানু জানান, সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ছেলে বাদশা বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু তিনি জাল ভিসা ও প্রতারণার শিকার হয়। এখন আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছি। ছেলে বেঁচে আছে কিনা, তাও জানি না। অতিদ্রুত আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
মানবপাচারের শিকার শহরের বারইপাড়া এলাকার নাছিমা আক্তার জানান, মাহবুবুর একজন প্রতারক। তিনি বিদেশ পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আমার স্বামীকেও বিদেশে নেওয়ার কথা বলে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের পাকিস্তান থেকে ইরান সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে সুফিয়ানের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে নীলফামারী জজ কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অপরদিকে, শিউলি বেগম সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তবে রোববার পর্যন্ত কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতারক মাহবুবুরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
তৈয়ব আলী সরকার/এমবি