ঝিনাইদহ শহরের ডাকবাংলা বাজার এলাকায় একটি চাতালে দম্পতিকে আটকে রেখে নির্যাতনের পর নেছার আলী ওরফে আলমগীর (৫০) নামের এক শ্রমিককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে ডাকবাংলা বাজারসংলগ্ন ‘সরকার এন্টারপ্রাইজ’ নামের চাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নেছার আলী যশোরের চৌগাছা উপজেলার কান্দি গ্রামের মৃত সোনাই মণ্ডলের ছেলে। বর্তমানে তিনি স্ত্রীসহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার এলাকায় বসবাস করতেন।
নেছার আলীর স্ত্রী দিপালী খাতুন বলেন, টাকা ধার নিয়ে দিতে না পারায় আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। সোমবার সকালে কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার বাজারের একটি হোটেলে খেতে বসি। তখন পাওনাদাররা আমাদের সেখান থেকে বের করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় মেম্বার ও পুলিশের উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠক হয়। তখন আমার বোন শিফালী পাওনা টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং চাতাল ব্যবসায়ী শফিকুলের পাওনা দেড় লক্ষাধিক টাকা ফেরত দিই। এরপরও আমাদেরকে ধরে নিয়ে আসে। রাতে চাতালের দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। সকালে আমার সামনে আমার স্বামী নেছার আলীর পায়ে লাঠি দিয়ে দুটি বাড়ি মারে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবাদ করলে শরিফুলের বাবা আমাকে ধাক্কা দিতে দিতে নিচের তলায় নিয়ে একটি কক্ষে আটকে রাখে। প্রায় ১০ মিনিট পর দেখি, আমার স্বামীর নিথর দেহ দ্বিতীয় তলা থেকে বের করে একটি গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। তখন আমি কান্নাকাটি করতে থাকি। আমার স্বামীকে ওরা মেরে ফেলেছে।
দিপালী খাতুনের বড় বোন শিফালী খাতুন জানান, আমার বোনজামাইকে হত্যা করা হয়েছে। শরিফুলের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল আমার বোনজামাই। সে টাকা আমি গতকালই দিয়ে দিয়েছি। তাহলে কেন রাতে ঘরের মধ্যে তালা লাগিয়ে আটকে রেখে সকালে মারধর করা হলো। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
ডাকবাংলা চাউল কল মালিক সমিতির সভাপতি আক্তার হোসেন ভাণ্ডারী জানান, আমাদের বাজারে ৯৩টি অটো ও সেমি-অটো রাইস মিল রয়েছে। শ্রমিকদের কারণে মিল মালিকদের মাঝে মাঝে খুব সমস্যায় পড়তে হয়। তাদের অগ্রিম টাকা দিয়ে চাতালে নিয়ে আসতে হয়। তবে এ শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা শুনে হাসপাতালে এসেছি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চলছে। রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
এম বুরহান উদ্দীন/এমবি