
ছবিতে ডান থেকে নিহত ফিরোজ আল মামুন, গ্রেপ্তার জামাল উদ্দীন ও ফিরোজা খাতুন | ছবি : সংগৃহীত
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রেম-প্রতারণা ও পরকীয়ার জটিল জালে চাঞ্চল্যকর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, মালয়েশিয়া ফেরত প্রবাসী ফিরোজ আল মামুন পরকীয়া প্রেমিকার ফাঁদে পড়ে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) উপজেলার তরফপুর গ্রামের একটি ক্ষেতের জমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফিরোজা খাতুন ও জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের দাবি, মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর গ্রামের প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় পরকীয়া সম্পর্ক করে আসছিলেন। এক বা দুজন নয়, একসঙ্গে তিন যুবকের সঙ্গে ছিল তার অনৈতিক সম্পর্ক। নিহত ফিরোজ আল মামুন তাদেরই একজন। কিছুদিন আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। বাকিদের একজন জামাল উদ্দিন, যিনি এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত।
ঘটনার দিন (সোমবার রাতে) ফিরোজা খাতুন ফোন করে মামুনকে তার বাড়িতে ডাকেন। নির্দ্বিধায় সেখানে যান মামুন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির হন ফিরোজার আরেক প্রেমিক জামাল উদ্দিন। এসময় মুখোমুখি হন দুই প্রেমিক। তীব্র কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জামাল লাঠি দিয়ে মামুনের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। এরপর মরদেহ পাশের একটি ক্ষেতে ফেলে আসেন ফিরোজা ও জামাল।
স্থানীয়রা পরদিন (মঙ্গলবার) ক্ষেতে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মামুনের মরদেহ উদ্ধার করে।
জানা গেছে, ফিরোজা খাতুনের বিরুদ্ধে পূর্বেও বিভিন্ন পরকীয়ার অভিযোগ ছিল। এমনকি এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিক সালিশি বৈঠকও হয়েছিল। এলাকাবাসী বলছেন, স্বামী বিদেশে থাকার সুযোগ নিয়ে ফিরোজা খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নীপতি ফরহাদ মোল্লা বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে ফিরোজা খাতুন ও বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে জামাল উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনেই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ওসি রাশেদুল ইসলাম বলেন, এটি প্রেমঘটিত একটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। আমরা হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
- রাব্বি/এটিআর