সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মনাই নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নদীতীরবর্তী রামদীঘা গ্রামের কয়েকটি পরিবার বসতভিটা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

তারা অভিযোগ করেছেন, একাধিকবার নিষেধ করার পরও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। এতে নদী ভাঙনের ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা মনাই নদীতে চলমান অবৈধ বালু উত্তোলনের সময় শাহিন মিয়া (২৮) নামের এক যুবককে নৌকা ও ড্রেজার মেশিনসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। আটক শাহিন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার  (২৪ জুলাই) দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় মামলার বাদী স্থানীয় বাসিন্দা তারেক মিয়া জানান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম মজনু ও ছাত্রদলের সদস্য সচিব মুসাব্বির তালুকদার সাগরের নেতৃত্বে একটি চক্র গত ১৫ দিন ধরে মনাই নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক অভিযানে একজনকে হাতেনাতে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর তিনি বাদী হয়ে মধ্যনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় আটককৃত শাহিন জানায়, বিএনপি নেতা কাইয়ুম মজনুর নির্দেশেই তারা বালু উত্তোলন করে আসছিল এবং এর বিনিময়ে মজনুকে নিয়মিত মাসোহারা প্রদান করা হতো।

স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদী ভাঙনে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম মজনু বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি এসবের সঙ্গে কখনো জড়িত ছিলাম না, এখনো নেই। একটি কুচক্রী মহল আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন  করার জন্য এসব মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে।’ 

এ বিষয়ে মধ্যনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।’

বিএনপি নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে, ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এজাহারে তাদের নাম রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

• মোহাম্মদ ইমাম হোসেন/এমআই