Logo

সারাদেশ

তদন্তের ৫ দিন আগে বাউফল পরিবার পরিকল্পনা অফিসে সন্দেহজনক তৎপরতা

Icon

আরিফুল ইসলাম সাগর, বাউফল (পটুয়াখালী)

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৮

তদন্তের ৫ দিন আগে বাউফল পরিবার পরিকল্পনা অফিসে সন্দেহজনক তৎপরতা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে তদন্ত শুরুর আগেই ছুটির দিনে গোপনে নথিপত্র সাজানো এবং স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সরকারি ছুটির দিনেও কার্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে অন্তত সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নথিপত্রে কারসাজিতে ব্যস্ত ছিলেন।

তাদের মধ্যে দুইজন অফিস সহকারী ও তিনজন মাঠকর্মীও ছিলেন বলে জানা গেছে। এ সময় ওয়ার্ড পর্যায়ের হাজিরা বহিতে পুরনো তারিখে স্বাক্ষর করতে দেখা যায় তাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, তালাবদ্ধ অফিসের ভেতরে বসে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথি সাজানো হচ্ছে। অচেনা রিকশাচালকদের মাধ্যমে বাইরে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন কাগজপত্র।

জানা যায়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বাউফল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা ডা. সানজিদা ইসলাম জেসমিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অফিসে নিয়মিত অনুপস্থিত থাকা এবং ডিজিটাল হাজিরা জালিয়াতির অভিযোগ প্রকাশিত হয়। এরপর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর তাকে দ্রুত বদলি করে এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে আগামী ৩০ জুলাই সরেজমিন তদন্তে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

তদন্ত শুরুর ঠিক পাঁচ দিন আগে ছুটির দিনে অফিসে গোপন এই তৎপরতা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই ধারণা করছেন, তদন্তের আলামত গোপন করতেই এভাবে অফিস খুলে কারসাজি করা হচ্ছে।

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জালাল উদ্দিনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি প্রথমে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। পরে বলেন, ‘ম্যাডাম (ডা. সানজিদা) চলে যাবেন, তাই কিছু ফরমের কাজ ছিল।’ তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট ফরম দেখাতে পারেননি।

অন্যদিকে, ছুটির দিনে অফিসের গেটে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে কাজ করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এক সহকারী বলেন, ‘পশুপাখি ঢুকে পড়ে তাই তালা দিয়েছি।’ আবার উপস্থিত মাঠকর্মীরা দাবি করেন, তারা চিকিৎসার জন্য এসেছেন, কাজের জন্য নয়। অথচ তাদেরকে অফিসের হাজিরা বহিতে স্বাক্ষর করতে দেখা যায়।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মাঠ পর্যায়ে গর্ভবতী নারী ও নবজাতকদের কোনো ধরনের সেবা দিচ্ছে না বাউফল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়। অথচ এসব কার্যক্রমের তথ্য থাকার কথা রয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ের হাজিরা বহিতে। বর্তমানে এসব তথ্য গোপন করতে পুরনো তারিখে জাল স্বাক্ষর বসানো হচ্ছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের কাছে ২০২৩ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত হাজিরা বহি চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের এই ঘটনার বিষয়টি অধিদপ্তরকে জানানো হবে। তদন্ত কমিটি এসে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ডা. সানজিদা ইসলাম জেসমিনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তের আগে এমন তৎপরতা সন্দেহজনক। এটি আসলে প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।’

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

দুর্নীতি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর