র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমনের বাবাকে মারধরের অভিযোগ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১:২২

ঝালকাঠির রাজাপুরের সাতুরিয়া গ্রামে র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে (৫৫) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার সাতুরিয়া ইঁদুরবাড়ি গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে সন্ধ্যায় রাজাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তোফাজ্জেল হোসেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, তোফাজ্জেল হোসেনের সঙ্গে প্রতিবেশী মো. ইব্রাহীম হাওলাদার ও আবদুল হাইয়ের পূর্ববিরোধ রয়েছে। জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হতেই ওই দুজনসহ আরও চারজন তাকে ঘিরে ধরেন। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে লিমন হোসেনের করা অভিযোগ তুলে নিতে বলেন। তোফাজ্জেল হোসেন এতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন ইব্রাহীম ও আবদুল হাই।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাতুরিয়ায় নিজের বাড়ির পাশে গুলিবিদ্ধ হন লিমন। বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র্যাব সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। ওই ঘটনার পর র্যাব লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করে। সেই মামলায় র্যাবের পক্ষে ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন ইব্রাহীম হাওলাদার।
শুক্রবারের ঘটনার লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রবেশ করে মো. ইব্রাহীম ও আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে ছয়-সাতজন বাঁশ কাটার চেষ্টা করেন। তোফাজ্জেল বাধা দিলে আসামিরা তাকে পিটিয়ে আহত করেন।
এ ঘটনায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম রাজাপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় ঝালকাঠির আদালত মো. ইব্রাহীমকে দুই বছরের ও আবদুল হাইকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। ২০২৪ সালে এক মাস কারাভোগের পর ইব্রাহীম হাওলাদার জামিনে মুক্ত হয়ে লিমনের পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার ছেলে লিমন হোসেনের করা অভিযোগ তুলে নিতে অস্বীকার করায় আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। ইব্রাহীম হাওলাদারের নেতৃত্বে এর আগেও আমার ওপর হামলা হয়েছে।’ লিমন হোসেন বলেন, ‘আমি আমার বাবার ওপর এ হামলার বিচার চাই।’
অভিযুক্ত ইব্রাহীম হাওলাদারের দাবি, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে লিমন প্রভাব খাটিয়ে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।
মো. আ. রহিম রেজা/এমবি