বৈরী আবহাওয়ায় ইলিশ শূন্য ট্রলার, বিপাকে উপকূলের জেলেরা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০১
-68846f2da6654.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে আবারও খালি হাতে ঘাটে ফিরছেন পটুয়াখালীর উপকূলের জেলেরা। চলতি মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটছে তাদের। লোকসানের ঘানি টানতে টানতে অনেকেই পেশা পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন।
জানা যায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। ফলে দেশের অন্যতম মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর এলাকার শত শত মাছ ধরার ট্রলার খাপড়াভাঙ্গা নদীতে আশ্রয় নিয়েছে। কুয়াকাটা উপকূলজুড়ে জেলেদের মধ্যে এখন শুধু হতাশা আর ক্ষতির হিসাব।
জেলেরা জানান, মৌসুমের শুরুতে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর টানা নিম্নচাপ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ ধরতে পারেননি তারা। সমুদ্র কিছুটা শান্ত হলেই ট্রলার নিয়ে ফিশিংয়ে নামেন, কিন্তু দু-একদিন না যেতেই আবহাওয়া খারাপ হয়ে আবার ফিরে আসতে হয়। এতে প্রতিটি ট্রলারের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে মালিকদের।
আলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী জাফর হাওলাদার বলেন, ‘৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গেলেই লঘুচাপ বা নিম্নচাপে আটকে যাচ্ছি। প্রতিবার ট্রলার পাঠাতে ২-৩ লাখ টাকা বাজার করতে হয়। বারবার খালি হাতে ফিরে এসে এখন পথে বসার উপক্রম।’
এফবি বিসমিল্লাহ-১ ট্রলারের মাঝি একলাস গাজী বলেন, ‘সাগরে ঠিকমতো নামতেই পারছি না। বাজার করে গিয়ে দুইদিনের মধ্যে ফিরে আসতে হচ্ছে। লাভ তো দূরের কথা, ধারদেনা করতে হচ্ছে। এভাবে চললে পেশাই ছাড়তে হবে।’
মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, ‘ইলিশের দাম চড়া, কিন্তু জোগান নেই। ফলে আড়ৎ থেকে শুরু করে বিক্রেতা—সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।’
আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল ঘরামী বলেন, ‘চলতি বছর আমরা একেবারেই ব্যবসার মুখ দেখিনি। দাদনের টাকা উঠছে না, এখন সব ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছি।’
খাপড়াভাঙ্গা নদীর দুই পাড়ে এখন শত শত ট্রলার নোঙর করে আছে। আকাশজুড়ে ঘন মেঘ আর নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, ‘সমুদ্রে লঘুচাপ তৈরি হয়েছে, যা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। উপকূলজুড়ে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।’
এআরএস