কুষ্টিয়ায় ৬৫ লাখ টাকার সড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ
দুর্নীতির দায় ঘোলাটে বক্তব্যে এড়াতে চাইছেন প্রকৌশলী ও ঠিকাদার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৩:৩৩
-688484baec3b8.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ মাসউদ রুমী সেতুর সড়ক সংস্কারের নামে ৬৫ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাসুদ করিম এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজের টেন্ডার পায়। চলতি মাসের শুরুতেই সংস্কারকাজ শেষ করার দাবি করা হলেও মাত্র ১৫ দিনের মাথায় রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি।
কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী অংশে অবস্থিত গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে পণ্যবাহী ট্রাক, বাস ও ছোট যানবাহনের অন্যতম পথ এটি। কিন্তু সড়কের বেহাল দশায় প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা।
বাইকচালক শামছুল আলম বলেন, ‘১৫ দিন আগে সংস্কার করা রাস্তাটি এখন আগের চেয়েও খারাপ। বাইক নিয়ে চলাফেরা করাই দায়।’
ট্রাকচালক জামিল হোসেন বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক চালানো মানে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলা।’
আর অটোচালক আক্কাস বলেন, ‘আমার অটো উল্টে যাত্রীরা আহত হয়েছে। পেটের দায়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করি।’
স্থানীয়রা জানান, পিচ ও পাথর দিয়ে শুধু নামমাত্র সংস্কার দেখিয়ে পুরো টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কাগজে-কলমে কাজ দেখিয়ে পুরো প্রকল্পের অর্থ লুটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপ-প্রকৌশলী লিটন আহমেদ বলেন, ‘কাজে কিছু ত্রুটি হয়েছে, তবে অনিয়ম হয়নি।’ তবে পুরো দায় তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী ও আবহাওয়ার ওপর চাপিয়ে দেন।
এদিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাসুদ করিম এন্টারপ্রাইজের মালিকের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সওজ কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পিচ উঠে গেছে। এখানে ঠিকাদারের কোনো দোষ নেই। সরকার এ প্রকল্পে আর বরাদ্দও দেবে না।’
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিবছর নামমাত্র সংস্কার দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
আকরামুজজামান আরিফ/এআরএস