জোনায়েদ সাকি
শহীদদের মর্যাদা দিতে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ২১:০৪
-68863fffddb1f.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, শহীদদের দেওয়া প্রাণের মর্যাদা দিতে হলে ও নিজেদের ভবিষ্যত গড়তে হলে আমাদের নতুন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে হবে।
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ মিনারে গণসংহতি আন্দোলন জেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জুলাই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জিয়ারত করেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, লুটপাট, দুর্নীতি ও দখলদার অর্থনীতি বজায় রেখে এবং বিভাজনের সংস্কৃতি ধরে রেখে বাংলাদেশে কোনো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি সম্ভব নয়। এই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত পরিবর্তন করতে হবে। তার ওপর দাঁড়াবে নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। গণতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা ছাড়া গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত টিকে থাকতে পারে না। এজন্য গণমানুষের স্বার্থ রক্ষাকারী রাজনৈতিক দল প্রয়োজন, যা শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি, কর্মচারী, ছাত্র-তরুণসহ সকলের স্বার্থ রক্ষা করবে।
তিনি আরও বলেন, এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন, তারা আমাদের নতুন যাত্রার পথপ্রদর্শক। শহীদদের পরিবারের কাছে বলতে হচ্ছে, শহীদদের হত্যার বিচার এখনও হয়নি, তারা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাননি। আহতরা সম্পূর্ণ চিকিৎসা পাননি। তাদের জীবন-জীবিকার দায়িত্ব নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। সরকারকে সাফ জানাই, তারা অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। শহীদদের মর্যাদা দেওয়া ছিল সরকারের প্রথম দায়িত্ব।
জোনায়েদ সাকি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের পঞ্চদশ সংশোধনী ফ্যাসিবাদী শাসনের সূচনা। এই সংবিধান চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত করার চেষ্টা করেছে, যা ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করেছে। তিনি বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে এ দেশের মানুষ এই স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের শিকার।
তিনি বলেন, ২০১১ সাল থেকে আমরা এই ফ্যাসিবাদী শাসন ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। গণতান্ত্রিক সংবিধান ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়। ২০১৪ সালের পর থেকে বিরোধী দলের ওপর হামলা, মামলা, গুম ও অত্যাচার বেড়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর দেশ আরও অগ্রসর হয়নি কারণ সঠিক সামাজিক-রাজনৈতিক চুক্তি হয়নি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, মানুষের ক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ এবারের গণঅভ্যুত্থানে দাবানলে রূপ নিয়েছে। শহীদ আবু সাঈদ ও ওয়াসিম তাদের বুকে গুলি নিয়ে দেশের মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। মানুষ স্বপ্ন ছাড়া ঐক্যবদ্ধ হতে পারে না।
সমাবেশে শহীদ মারুফ মিয়ার মা মোর্শেদা বেগম, আহত জুলাই যোদ্ধা ফাতেমা খানম, আকাশ রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফাতেমা রহমান বিথী, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সংগঠক তুষার আহমেদ, শহীদ মোহাম্মদ ইমনের ভাই মোহাম্মদ সুজন, কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, জেলা দপ্তর সম্পাদক প্রেমা সরকার ও পৌর কমিটির আহ্বায়ক আদিবা হুমায়রা বক্তব্য দেন।
এআরএস