
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রাণী বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী মোস্তাফিজুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের সময় আসামি মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোস্তাফিজুর রহমান নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী অমরেন্দ্রনাথ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে নওগাঁর মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আনিছুর রহমান সাকিদারের মেয়ে রাণী বেগমের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ ৪০ হাজার টাকা, একটি ভ্যানগাড়ি ও একটি সেলাই মেশিন যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের রিফাত নামে এক ছেলে সন্তান হয়।
বিয়ের পর থেকেই মোস্তাফিজুর যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন। একপর্যায়ে রিফাত এক বছর বয়সী হলে স্ত্রীকে তালাক দেন তিনি। রাণী বেগম সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি ফিরে যান। এ সময় শ্বশুর আনিছুর রহমান আদালতে মামলা করলেও নাতি রিফাতের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরে তা প্রত্যাহার করে পুনরায় মেয়ের বিয়ে দেন মোস্তাফিজুরের সঙ্গে।
কিন্তু ফের বিয়ের পর মোস্তাফিজুর ভটভটি কেনার জন্য স্ত্রীকে ৫০ হাজার টাকার জন্য মারধর শুরু করেন।
২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাতে ঝগড়ার একপর্যায়ে কাঠের খাটিয়ার আঘাতে স্ত্রীকে হত্যা করেন মোস্তাফিজুর। পরদিন নিহতের বাবা আনিছুর রহমান নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ শুনানি ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
পিপি ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি বলেন, ‘আসামিপক্ষের ৪ জনসহ মামলায় মোট ১৮ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
এম এ রাজ্জাক/এআরএস