Logo

সারাদেশ

বাগেরহাটে নির্বাচনী আসন কমানোর প্রস্তাব, সর্বস্তরে তীব্র ক্ষোভ

Icon

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৭:২৪

বাগেরহাটে নির্বাচনী আসন কমানোর প্রস্তাব, সর্বস্তরে তীব্র ক্ষোভ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট জেলার চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমানোর প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি। বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

প্রস্তাব প্রকাশের পর থেকেই বাগেরহাটের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে এ সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘অবমাননাকর’ বলে মন্তব্য করেছেন।

কমিটি জানায়, সংবিধানের ১১৯-১২৪ ধারা অনুযায়ী আসন সীমানা পুনর্নির্ধারণের অংশ হিসেবে যেসব জেলায় ভোটার সংখ্যা তুলনামূলক কম, সেখানে আসন কমিয়ে আনা হচ্ছে; আর যেসব জেলায় বেশি, সেখানে আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে। সেই আলোকে বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ধারণা করছেন, নতুন প্রস্তাবে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল) এবং বাগেরহাট-৩ (মোংলা, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা) হিসেবে তিনটি আসন হতে পারে।

২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলার আয়তন ৩ হাজার ৯৫৯.১১ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ ১৩ হাজার। জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক পরিসরের বিচারে জেলা এখনো চারটি আসনের উপযুক্ত—এমনটাই বলছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে।

বাগেরহাট শহরের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাগেরহাট এমনিতেই অবহেলিত শহর। এখন যদি আসন কমে যায়, তাহলে উন্নয়ন আরও বাধাগ্রস্ত হবে। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবটি ভুল।’

পিসি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম মুন্সী বলেন, ‘চারটি আসন থাকলেও উন্নয়ন হয়নি, এখন একটি কমে গেলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।’

ছাত্রনেতা শেখ আল মামুন বলেন, ‘চারটি আসনই আমাদের কাছে কম মনে হতো। এখন একটি বাদ দিলে রাজনৈতিক কোন্দল বাড়বে, জনগণের দাবি সংসদে পৌঁছাবে না। আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, ‘বাগেরহাট একটি বৃহৎ জেলা। ৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই জেলা দীর্ঘদিন ধরে চারটি আসন নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে। এটি একটি অপমানজনক সিদ্ধান্ত এবং ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা।’

জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ‘বাগেরহাটে আসন কমানো ষড়যন্ত্রের অংশ। সুন্দরবন ও ষাট গম্বুজের মতো ঐতিহ্যবাহী এলাকা নিয়ে গঠিত এই জেলাকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে। আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারকে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।’

বর্তমানে বাগেরহাট জেলায় মোট চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে। বাগেরহাট-১ আসনে রয়েছে চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট; বাগেরহাট-২ আসন গঠিত বাগেরহাট সদর ও কচুয়া নিয়ে; বাগেরহাট-৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত মোংলা ও রামপাল; আর বাগেরহাট-৪ আসনে রয়েছে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা।

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

নির্বাচন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর