Logo

সারাদেশ

অনির্বাচিত সরকারের কারণে দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে : আমীর খসরু

Icon

সাহানুর রহমান, রংপুর

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪৪

অনির্বাচিত সরকারের কারণে দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে : আমীর খসরু

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রাজনৈতিক গণতন্ত্রের পাশাপাশি ব্যবসায়িক গণতন্ত্রও নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি, দেশ পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে দেশে দরকার গণতান্ত্রিক সরকার।’

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে রংপুর চেম্বার ভবনের হলরুমে আয়োজিত ‘রংপুর বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নের রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘দল বা বিশেষ ব্যক্তিকে সুবিধা দিয়ে সত্যিকারের পরিবর্তন আসে না। তাই দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন।’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাজনীতি ও অর্থনীতি পাশাপাশি চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি থাকবে সবার জন্য মুক্ত।’

রংপুর অঞ্চল থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরে তিনি এ অঞ্চলের শিল্পায়নের গুরুত্ব ও কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়ে কথা বলেন।

ইন্টারনেটভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘রংপুরের মানুষকে আর কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে না।’ তিনি রংপুরে দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেন।

উদ্যোক্তাদের জন্য পুরোপুরি অনলাইন নির্ভর আবেদন প্রক্রিয়ার ঘোষণা দিয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে।’

বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান শাসকগোষ্ঠী দেশের জনগণ ও ব্যবসায়ীদের জন্য নয়। নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে প্রশাসন ও অর্থনীতিকে জিম্মি করে রেখেছে তারা। এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকারের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে, অর্থনীতির গতি থমকে গেছে। এর অবসান ঘটাতে হলে দ্রুত একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য।’

স্বৈরাচার পলায়নের পর ‘নতুন প্রত্যাশা’ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার হাসিনার পলায়নের পর মানুষের মনে বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন আর প্রতিশ্রুতির বন্যা মানুষ গ্রহণ করে না। জনগণ বাস্তবায়ন চায়, অংশগ্রহণ চায়, ফল চায়। বিএনপি সেই বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে আগামী দিনের পরিকল্পনা নিচ্ছে, যাতে অর্থনীতি ও রাজনীতি পরস্পর সহযোগী হয়ে ওঠে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে কোনো বিশেষ গোষ্ঠী আর দেশের অর্থনীতি কুক্ষিগত করতে পারবে না। প্রতিটি নাগরিক যেন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারে, সেই সুযোগ তৈরি করব আমরা। উত্তরাঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে ঘিরে লাখো তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব—এটি বিএনপির অগ্রাধিকার।’

সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘চরম বৈষম্যের শিকার রংপুর অঞ্চল। এ অঞ্চলের মানুষ সহজ-সরল, তাই তাদের নিয়ে কেউ ভাবে না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রংপুরকে এগিয়ে নিতে কাজ করা হবে। দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত কোন সরকারই রংপুরকে নিয়ে ভাবেনি। তাই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এই বৈষম্যের শিকল ভাঙতে হবে, রংপুর বিভাগকে এগিয়ে নিতে হবে।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এমদাদুল হোসেন, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, বিভাগের আট জেলার চেম্বার নেতৃবৃন্দ, জেলা-উপজেলা বিএনপির নেতারা এবং উইমেন চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা।

সভায় বক্তারা বলেন, রংপুর বিভাগ আজও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে। এই অঞ্চলের মানুষের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি প্রয়োজন ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ। জনতার ম্যান্ডেট ছাড়া টিকে থাকা সরকার কখনোই দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে না।

সভা শেষে বিএনপি নেতারা বলেন, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আগামী দিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বেগবান করা হবে। রংপুর হবে দেশের অন্যতম উন্নয়ন হাব।

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বিএনপি নির্বাচন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর