Logo

সারাদেশ

ঘোড়ার গাড়ির চাকায় ঘোরে ভাগ্যের চাকা

Icon

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৭:৫৪

ঘোড়ার গাড়ির চাকায় ঘোরে ভাগ্যের চাকা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

আধুনিক যন্ত্রচালিত যানবাহনের যুগে যখন গ্রামীণ পরিবহনের দৃশ্যপট বদলে গেছে, তখনও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের আটপুনিয়া চর এলাকায় দেখা যায় ব্যতিক্রমী দৃশ্য—ঘোড়ার গাড়িতে ছুটে চলছেন মতিয়া মিয়া। বিলুপ্তপ্রায় এই বাহনকেই তিনি জীবিকার প্রধান ভরসা হিসেবে ধরে রেখেছেন।

একসময় গ্রামবাংলার প্রতিটি কোণে গরু, মহিষ কিংবা ঘোড়ার গাড়িই ছিল যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। সময়ের পরিক্রমায় এসব বাহন প্রায় হারিয়ে গেলেও মতিয়া মিয়ার ঘোড়ার গাড়ি যেন এক চলমান ইতিহাস। তিনি শুধু জীবিকা নির্বাহ করেন না, বরং একটানা টিকিয়ে রেখেছেন গ্রামীণ ঐতিহ্যের শিকড়।

পণ্য পরিবহন থেকে যাত্রী পারাপার—ঘোড়ার গাড়ির নানা কাজে এলাকাবাসীর কাছে এখনও নির্ভরতার নাম মতিয়া মিয়া। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে, যখন আধুনিক বাহন চরের বালিতে আটকে যায়, তখন মতিয়ার গাড়িই ভরসা হয় মানুষের। তার ঘোড়ার টগবগে ছুটে চলা যেন জানান দেয়, পুরনো হলেও এটি অপ্রয়োজনীয় নয়।

তবে এই জীবন মোটেই সহজ নয়। প্রতিদিন ঘোড়ার খাবার, পরিচর্যা, গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ—সবই করতে হয় নিরবচ্ছিন্নভাবে। তবু আধুনিক যানবাহনের দাপটে যেমন চাহিদা কমেছে, তেমনি আয়ের পথটিও কঠিন হয়ে উঠেছে।

তবু মতিয়া মিয়া থেমে যাননি। তার কাছে ঘোড়ার গাড়ি শুধু জীবিকা নয়, এটি তার আত্মপরিচয়ের অংশ, তার আত্মমর্যাদার প্রতীক। ছোট্ট সংসারে হাসি ফোটাতে এখনও তিনি আশ্রয় নেন এই ঐতিহ্যবাহী বাহনের ওপর।

মতিয়া মিয়ার এই গল্প আমাদের শোনায় এক অন্যরকম প্রতিরোধের ভাষা—যেখানে আধুনিকতার জোয়ারে কিছু মানুষ শেকড় আঁকড়ে ধরে বাঁচিয়ে রাখেন এক নিরন্তর আত্মবিশ্বাস আর পরিশ্রমের জোরে।

রাখিবুল হাসান রাখিব/এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর