Logo

সারাদেশ

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আরও অবনতির আশঙ্কা

Icon

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৩৩

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আরও অবনতির আশঙ্কা

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ছবি : বাংলাদেশের খবর

ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায়  উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রোববার সকাল ৬টায় ৫২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায় তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বিপদসীমার কাছাকাছি। এরপর সকাল ৯টায় তা দাঁড়ায় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটারে, অর্থাৎ বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। তবে তিন ঘণ্টার ব্যবধানে দুপুর ১২টায় তা বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।

তিনি বলেন, উজানে পানি বাড়লে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টেও পানি বাড়ে। ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

পাউবো সূত্র জানায়, বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি শ্লুইজ গেট (জলকপাট) খুলে দেওয়া হয়েছে। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি শাখা প্রকৌশল বিভাগ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, তিস্তার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে ৮-১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এছাড়াও ব্যারাজের পূর্বদিকে (ভাটি অঞ্চল) লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলার নদীঘেরা চর ও চরগ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এলাকার বানভাসী লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছে। বাড়িঘরে হাঁটু পরিমাণ পানি প্রবেশ করেছে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু এলাকায় সরে যাচ্ছে।

উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, ইউনিয়নের অন্তত ১০টি চর গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। নিম্নাঞ্চল ও বিস্তীর্ণ এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে ধীরে ধীরে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ব্যারাজ পয়েন্টে পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যে খগাখাড়িবাড়ীর বাইশপুকুর গ্রাম প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ অন্যান্য চরগ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

অন্যদিকে, জেলার জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, গোপালঝাড় ও আলসিয়া পাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলার নদ-নদীগুলো বন্যার পানিতে থইথই করছে।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম বলেন, উজানের ভারী বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সন্ধ্যা নাগাদ বন্যার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ইতোমধ্যেই নিম্নাঞ্চলসহ চরগ্রামগুলো তলিয়ে গেছে।

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুপুর ১২টার দিকে বিপদসীমা (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) থেকে ৫ সেন্টিমিটার ওপরে দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি শ্লুইজ গেট (জলকপাট) খুলে রাখা হয়েছে। আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

তৈয়ব আলী সরকার/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

নদী ভাঙন বন্যা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর