কুড়িগ্রামে সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৬
-68916be4aa676.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কাজাইকাটা এলাকায় সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা ও সেতুর অভাবে প্রায়ই দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতির মুখে পড়ছেন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরেই নির্মাণকাজ শুরু হবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দেশের স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত রৌমারীর দাঁতভাঙা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামে যাতায়াত ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি। রাস্তার করুণ দশার পাশাপাশি হলহলিয়া নদীর ওপর একটি সেতু না থাকায় উপজেলার সাহেবের আলগা, চর শৌলমারী ও দাঁতভাঙা ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রামের মানুষ প্রতিদিন সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ছেন।
এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে শান্তিরচর, খড়ানির চর, কাজাইকাটা, গাছবাড়ি, চর কাজাইকাটা, আনন্দবাজার, ফুলকার চর, সোনাপুর, গেন্দার আলগা, নামাজের চর, খেয়ারচর, ডিগ্রিরচর, বাংলা বাজার, চর ইটালুকান্দা, লাউবাড়ি, উত্তর নামাজের চর, জাহাজের আলগা, দই খাওয়ার চর, হবিগঞ্জ ও ফুলকার চর।
এইসব চরাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় কৃষিপণ্য নিয়ে বিপাকে পড়ছেন স্থানীয় কৃষকরা। ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বেড়েছে বাল্যবিয়ে ও অন্যান্য সামাজিক অপরাধ।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা, মর্জিনা বেগম, মজিবর ও সমশের আলী বলেন, হলহলিয়া নদীর ওপর সেতু না থাকায় বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আন্দোলন করেও কোনো লাভ হয়নি। ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিদের দেখা মিললেও পরে আর তাঁদের খোঁজ মেলে না।
তাঁরা জানান, এলাকাবাসীর উদ্যোগে চার শত ফুট দৈর্ঘ্যের একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সাঁকো পার হচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত পথে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন, বিশেষ করে অসুস্থ রোগী, গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্করা।
তিনটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা সারা বছরই এ দুর্ভোগের শিকার হন। বর্ষা মৌসুমে সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। নির্বাচনের আগে নেতারা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও রয়ে গেছে অব্যাহত দুর্ভোগ।
স্থানীয়দের মতে, সেতু ও রাস্তা নির্মাণ হলে জেলা শহরের সঙ্গে রৌমারী উপজেলার যাতায়াতের সময় কমে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথও উন্মুক্ত হবে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘কাজাইকাটা এলাকায় ৩৬৩০ মিটার চেইনেজে একটি সেতু নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরেই কাজ শুরু হবে।’
এআরএস