রাজনীতিকরণের কারণে হয়নি ফেনী কলেজের শতবর্ষ উৎসব, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ২১:২৫

ছবি : সংগৃহীত
ফেনী সরকারি কলেজের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব রাজনৈতিক কারণে সফল হতে পারেনি। কয়েক দফা পেছানোর পরেও আয়োজনে বিশৃঙ্খলা ও রাজনীতিকরণের কারণে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত ৮ আগস্ট এ বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
শতবর্ষ উদযাপনের দিনক্ষণ প্রথমে ২০২২ সালের ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হলেও, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। এর আগে ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের কারণে প্রথম দফায় স্থগিত হয়।
শতবর্ষ উদযাপনে রেজিস্ট্রেশনের আহ্বানে তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেন। তবে পরে অনেকে রেজিস্ট্রেশন ফি ফেরতের দাবিতে সংশয় প্রকাশ করেন। তুমুল সমালোচনার পর কিছু শিক্ষার্থীকে টাকা ফেরত দেয়া হয়।
আয়োজক কমিটিতে রাজনীতিক নেতাদের প্রাধান্য পাওয়ায় অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিশেষ করে জেলা ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দেশ-বিদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ রেজিস্ট্রেশন থেকে বিরত থাকেন।
আয়োজকরা জানান, প্রাক্তনদের থেকে ৩ হাজার এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের থেকে ১ হাজার টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি নেয়া হয়েছিল। মোট ২ হাজার ২৩১ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এর মধ্যে ৮৭২ প্রাক্তন ও ১ হাজার ১৭ বর্তমান শিক্ষার্থীর টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ‘কলেজের শতবর্ষ অনুষ্ঠান সফল করতে হলে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সাবেক সচিব, সরকারি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।’
জামায়াতের জেলা সহকারী সম্পাদক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী জামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, ‘আয়োজক কমিটিতে শুধু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের স্থান পেয়ে ভিন্নমতের মানুষের অংশগ্রহণ হয়নি। তাই প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উৎসবে অংশ নিতে আগ্রহী হয়নি।’
কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হলেও তিনি দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেননি। ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় দলীয় প্রভাব ও উপ-কমিটির সমন্বয়হীনতার কারণে উদযাপন কমিটি শুরু থেকেই ব্যর্থ হয়।
এমরান পাটোয়ারী/এআরএস