ফেনীতে এক বছরে ভূমি রেজিস্ট্রি থেকে ২০৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয়

এম. এমরান পাটোয়ারী, ফেনী
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১৪:১৯

ছবি : বাংলাদেশের খবর
সরকারের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস ভূমি রাজস্ব কর। ইউনিয়ন পর্যায়ের ভূমি অফিস বা তহসিল অফিস এবং উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এ রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে এ খাতে রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে অনলাইন সেবা চালুর ফলে জনসাধারণের ভোগান্তি কমেছে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে।
দাখিলা, খতিয়ান ও জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইনে যাচাইয়ের ফলে প্রতারণার পথ অনেকটাই বন্ধ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ফলে এখাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ফেনীর সদর, লেমুয়া, মতিগঞ্জ, দাগনভূঞা, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম—এই সাতটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে গত জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে ৩৪ হাজার ৩৪৩টি দলিল নিবন্ধনের মাধ্যমে ২০২ কোটি ৯৯ লাখ ২৪ হাজার ৬১০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
তথ্য বলছে, ফেনীর অর্থনীতি প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীল। সরকার পরিবর্তনের পর প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় জমি কেনাবেচা কিছুটা কমলেও বর্তমানে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। তবে দলিল রেজিস্ট্রি নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগও রয়েছে। বিশেষ করে মৌজা রেটের অসামঞ্জস্য দূর করে এলাকা ও শ্রেণিভেদে রেট নির্ধারণের দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কর্তৃক সরকারি রশিদ বা ব্যাংক চালানের বাইরে ‘সেরেস্তা’ নামে অতিরিক্ত ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। তহসিল অফিসে ১০ টাকার দাখিলার জন্য ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগও আছে। এতে অনেকে জমি রেজিস্ট্রি থেকে বিরত থাকেন।
ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার ঘটনা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে বলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে।
ফেনী সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান মোহাম্মদ তামিম জানান, রেজিস্ট্রি খরচ, উৎস কর ও স্থানীয় সরকার কর সরাসরি ব্যাংকে জমা হয় এবং নির্দিষ্ট কোডের মাধ্যমে রাজস্ব খাতে যুক্ত হয়। এতে রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
জেলা রেজিস্ট্রার সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী, জেলা সদরের পৌর এলাকায় প্রতি শতকে ২৫ হাজার টাকা অথবা দলিল মূল্যের ৩ শতাংশ (যেটি বেশি), উপজেলা পর্যায়ের পৌরসভায় প্রতি শতকে ১০ হাজার টাকা অথবা দলিল মূল্যের ২ শতাংশ (যেটি বেশি) উৎস কর নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আগে ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের দলিলে আয়কর রিটার্ন প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখন যেকোনো মূল্যের হস্তান্তর দলিলের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য।
তিনি আরও বলেন, সেবা সহজীকরণ ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারদের নিয়মিত তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।
এআরএস