
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের স্ত্রী ফরিদা বেগম। ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের স্ত্রী ফরিদা বেগম। এসময় তিনি সরকারের কাছে আইন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের সাথে সাক্ষাতসহ সাত দফা দাবি জানান।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুর প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্যে ফরিদা বেগম বলেন, সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডের সিসিটিভির ফুটেজসহ সব ডকুমেন্টারি যেভাবে আপনারা জনসম্মুখে এনেছেন, তার জন্য আমি ও আমার পরিবার আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনাদের সত্য লিখনির কারণে আজ আমার স্বামীর হত্যাকারীদের অপরাধ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। না হলে সাগর-রুনীর হত্যাকাণ্ডের মতো আলামত নিখোঁজ ও তদন্তের নামে অনেক নাটক হতো।
সাংবাদিক তুহিনের স্ত্রী আরও বলেন, আজ আপনারা আমার পাশে আছেন বলেই আমি এখনো সুস্থ ও শক্ত আছি। তুহিন হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহানগর পুলিশ ও র্যাব আট আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা টাকা খরচ করে ভাড়াটিয়া কিলার দিয়ে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সাত দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো-
১. প্রয়াত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে সকল আসামিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
২. ১৫ দিনের মধ্যে সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে হবে।
৩. মামলার বাদী, ঘটনাস্থলের সব সাক্ষী, আমার পরিবার ও দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক মো. খায়রুল আলম রফিকের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডের মামলা ৯০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করে সর্বোচ্চ শাস্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
৫. সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডের মামলা বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত খুনিদের কারাগারে রেখে বিচার কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
৬. প্রয়াত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করেছেন, তাই তার পরিবার ও সন্তানের দায়িত্ব নিতে হবে।
৭. গাজীপুরসহ সারাদেশের সকল সাংবাদিকের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে এবং সাংবাদিকদের জন্য আলাদা একটি হটলাইন চালু করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যা মামলার বাদী ও তার বড় ভাই মো. সেলিম, দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক মো. খায়রুল আলম রফিক, তুহিন হত্যাকাণ্ডের আইনজীবী প্রশান্ত চন্দ্র সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট রাত ৮টার দিকে ভিডিও ধারণ করার কারণে নগরীর বাসন থানা এলাকার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জনসম্মুখে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মহানগর পুলিশ ও র্যাব আসামিদের গ্রেপ্তার করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করে।
কাজী মো. আব্দুল মান্নান/এমবি