চরফ্যাসনে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড জটিলতায় টিসিবি পণ্য বিক্রয় ৫ মাস ধরে স্থবির

চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৫৬
-689deb2281cf2.jpg)
ছবি : সংগৃহীত
প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড জটিলতার কারণে ভোলার চরফ্যাসনের পৌরসভাসহ ছয় ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রয় গত পাঁচ মাস ধরে স্থবির হয়ে আছে।
ফলে এসব এলাকার ৫ হাজার ৯১২টি সুবিধাভোগী পরিবার সুলভমূল্যে পণ্য কিনতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন।
গত ২৩ জুন চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়া অভিযোগে টিসিবি ডিলাররা জানান, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিতরণে এলাকা ভিত্তিক প্রভাবশালী নেতা-কর্মীরা বাধা সৃষ্টি করছেন। কিছু এলাকায় অবিক্রিত পণ্য নেতা-কর্মীরা ফেরৎ নিতে না দিয়ে তাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য করছেন। আবার কোথাও ফ্যামিলি কার্ডধারীদের পণ্য ক্রয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে টিসিবি পণ্য বিক্রয় কমে গেছে এবং ডিলাররা লোকসান ভুগছেন।
ডিলাররা জানান, উপজেলার ১৬ হাজার ১৬৮ জন সুবিধাভোগীর কার্ড স্মার্ট করা হলেও তা সক্রিয় করা হয়নি।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব)রা দায়িত্বে থাকলেও কার্যক্রম ত্বরান্বিত করছেন না। বর্তমানে মাত্র ৯ হাজার ৮৬টি কার্ড সক্রিয় রয়েছে। কার্ড সক্রিয় করতে ব্যর্থতার কারণে বিতরণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এতে ডিলাররা দীর্ঘমেয়াদি লোকসানে পড়েছেন।
ডিলাররা স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ইউনিয়ন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দাবি জানিয়েছে। সমাধান না হওয়ায় তারা টিসিবি পণ্য গ্রহণ ও বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন।
জিন্নাগড় ইউনিয়নের টিসিবি সুবিধাভোগী পারভীন বেগম জানান, চলতি বছরের আট মাসের মধ্যে শুধু জানুয়ারির পণ্য বিতরণ করা হয়েছে। বছর শেষ হতে চললেও বাকি পণ্য বিতরণ হয়নি। এতে ওই ইউনিয়নের অনেক মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
দুলারহাটা থানার নীল কমল ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. নান্নু মিয়া বলেন, তার কার্ড থাকা সত্ত্বেও এপ্রিল থেকে তিনি কোনো পণ্য নিতে পারেননি। সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেও পণ্য বিক্রয় কবে শুরু হবে তা নিশ্চিতভাবে জানতে পারেননি। পারভীন বেগম ও মো. নান্নুর মতো আরও হাজার হাজার পরিবার বর্তমান বাজার মূল্যের উর্ধ্বগতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ডিলারদের সূত্রে জানা যায়, চর মাদ্রাজ, ওমরপুর, কুকরী-মুকরী, মুজিব নগর, নুরাবাদ, নীল কমল ও পৌরসভায় এপ্রিল থেকে টিসিবি পণ্য বিতরণ বন্ধ রয়েছে। এসব ইউনিয়নে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৮শ ১২ জন।
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আবু বকর ছিদ্দিক জানান, টিসিবি পণ্যের মধ্যে চাল উপজেলা খাদ্য বিভাগ থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। অন্যান্য পণ্য জেলা টিসিবি কর্তৃপক্ষ থেকে সরবরাহ করে। সব পণ্য একত্রিত করে বিতরণের দায়িত্বে রয়েছেন নির্ধারিত ১১ জন ডিলার। তিনি বলেন, বরাদ্দ দেওয়া হলেও কিছু ইউনিয়নে কয়েক মাস ধরে চাল বিতরণ হচ্ছে না।
চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিন মিথি বলেন, টিসিবি সরবরাহ কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে তদারকি করা হয়। ডিলার নিয়োগও জেলা থেকে হয়। বিতরণে কোনো বিঘ্ন দেখা দিলে ডিলারা জেলায় যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
ফাহিম/এআরএস