উত্তরের ৫ জেলায় বন্যার পানি নেমে ভেসে উঠছে ক্ষত

সাহানুর রহমান, রংপুর
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮:২৬
-68a1ca68f3d5e.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
উত্তরের পাঁচ জেলা রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার নদী অববাহিকা থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি নেমে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষত। অপুরণীয় ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।
পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তার গর্ভে ৩৮টি বসতবাড়ি বিলিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব। তিনি জানান, এই পাঁচ জেলায় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে অন্তত ১৪৩টি বসতবাড়ি। এসব দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত পাঁচ দিনের বন্যায় এই জেলাগুলোর ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সামান্য ক্ষতি হলেও নতুন করে রোপণের সুযোগ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।
উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলের ফসলি খেত ডুবে যাওয়ায় ৫ জেলার প্রায় ৪০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়। নদীতে ডুবে মৎস্য চাষিদের পুকুরের মাছও নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে রোপা আমন খেত পঁচে যাওয়ায় তিস্তাপাড়ের কৃষকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।
পানি নেমে গেলেও নদীপাড়ের মানুষদের দুর্ভোগ কমেনি। ভাঙা বাড়ি-বাড়ি, বেড়া মেরামত করতে হচ্ছে। বন্যার পানিতে ভেসে আসা ময়লা-আবর্জনা প্রতিটি বাড়িতে ঢুকে গেছে। স্কুলের আসবাবপত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রংপুরের কৃষি কর্মকর্তারা জানান, তৃতীয় দফার বন্যায় ৫ জেলার ৪,৭১৫ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। তবে নদীপাড়ের চাষিরা উচু এলাকায় আমনের বলান রাখায় ক্ষতি কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে।
পানি কমার সঙ্গে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রংপুরের গংগাচড়া, পীরগাছা, রাজারহাট, নীলফামারীর ডিমলা ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ২৩টি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয়রা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুর অঞ্চলের প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, পানি কমেছে, বন্যা পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। তবে নদীতে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এআরএস