কুমিল্লা ইপিজেড এলাকায় ‘ক্রাইম জোন’, আতঙ্কে নগরবাসী

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৫৯
-68a323c39fd09.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি অপরাধের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার ইপিজেড আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদরাসার সামনের অংশে গড়ে উঠেছে ‘ক্রাইম জোন’, যেখানে সাধারণ মানুষ শুধু রাত নয়, দিন-দুপুরেও ছিনতাই ও মারধরের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, অপরিচিত কিছু যুবক দলবেঁধে গায়ে পড়ে ঝগড়ার অভিনয় করে। এরপর মুহূর্তের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে মারধর করে এবং তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন বা মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয়।
এছাড়া কুমিল্লা ইপিজেডে কর্মরত নারী ও পুরুষ শ্রমিকরাও অহরহ এ ধরনের ঘটনা শিকার হচ্ছেন। প্রশাসনের কার্যক্রমে তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগীরা জানান, এদের কার্যক্রম এত দ্রুত ঘটে যে আশপাশের লোকজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে পথরোধ করা হয়। কয়েকজন ছেলে এসে বলে, আমার মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে। এরপরই তারা আমাকে ঘিরে ধরে মারধর করে এবং মোবাইলের মাধ্যমে পরিচিতদের থেকে এক লাখ টাকা জোর করে এনে নেয়। এছাড়া মোটরসাইকেলের ব্যবহৃত তেলও বের করে নিয়ে যায়।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেলাল হোসাইন নামে একজন বলেন, টমছমব্রিজ ও কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে চোর ও ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য তৈরি হয়েছে। অপরিচিত বা মুরুব্বি শ্রেণীর লোকদের লক্ষ্য করে তারা ধাক্কা দেয় এবং সঙ্গে থাকা টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। ভুক্তভোগী চিৎকার করলেও আশপাশের মানুষ সাহায্য করতে সাহস পায় না।
পুলিশ সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় এ ধরনের একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ অভিযানের মাধ্যমে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করছে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, ‘আমরা এসব অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। কেউ এমন ঘটনার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ জানাতে অনুরোধ করছি।’
সচেতন নাগরিক শাহ মোহাম্মদ আলমগীর মনে করছেন, নেশাজাতীয় দ্রব্যের বিস্তার এই ধরনের অপরাধ বৃদ্ধির পেছনের বড় কারণ। তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্যে ছিনতাইকারীর ঘটনা প্রশাসন না ঠেকাতে পারলে মানুষ ভয়ে ঘর থেকে বের হবে না। সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে কাজ করলে এসব অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব।’
এআরএস