Logo

সারাদেশ

তিস্তায় ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ নিধন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

Icon

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৪

তিস্তায় ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ নিধন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

ছবি : বাংলাদেশের খবর

দেশ প্রযুক্তিতে এগিয়ে গেলেও এর অপব্যবহারে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। এরই অংশ হিসেবে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সীমান্তবর্তী তিস্তা নদীতে অসাধু একটি চক্র দিন-রাত ইনভার্টারের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার করছে। এতে শুধু মাছ নয়, ধ্বংস হচ্ছে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলও।

জানা গেছে, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি বা ইনভার্টারের সঙ্গে বৈদ্যুতিক তার যুক্ত করে নদীতে ফেলা হয়। এতে পানিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে ছোট-বড় সব ধরনের মাছের পাশাপাশি কুচিয়া, কাঁকড়া, ব্যাঙ, শামুক ও শৈবাল অচেতন বা মৃত অবস্থায় ভেসে ওঠে। অসাধু জেলেরা এরপর সহজেই জাল দিয়ে সেগুলো সংগ্রহ করে। এভাবে রেণু মাছ থেকে শুরু করে প্রজননক্ষম মাছ পর্যন্ত নির্বিচারে মারা যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম ছাতনাইয়ের কালিগঞ্জ, পূর্ব ছাতনাইয়ের ঝাড়সিংহেশ্বর, খগাখরিবাড়ির পাগলপাড়া, টেপাখরিবাড়ির জিহাদবাজার ও তেলিরবাজার, খালিশা চাপানির ছোটখাতা গ্রোয়েন বাঁধ, ঝুনাগাছ চাপানির ভেন্ডাবাড়ি ও ছাতুনামা, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডনের স্পারসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে।

স্থানীয় জেলে আব্দুল মালেক বলেন, ‘আগে জালে প্রচুর মাছ উঠত। এখন দিনভর জাল ফেলেও আগের মতো মাছ মেলে না। এই ইলেকট্রিক শক দিয়েই সব মাছ মারা যাচ্ছে।’

মৎস্যবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইলেকট্রিক শক মাছের প্রজনন চক্রকে ধ্বংস করছে। রেণু মাছ মারা যাওয়ায় দেশীয় মাছ যেমন শোল, বোয়াল, টেংরা, পুঁটি দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে। এটি খাদ্যনিরাপত্তা ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি।’

এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরা ভয়াবহ পদ্ধতি। এতে সব জলজ প্রাণী ধ্বংস হয়। আমরা জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করব।’

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, ‘ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরা শুধু অবৈধ নয়, এটি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা বিষয়টি নজরদারিতে এনেছি। যেকোনো সময় যৌথ অভিযান চালিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

  • রাশেদ খান/এমআই
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর