চাঁদপুরে মেঘনার পাড় ঘেঁষে ড্রেজারে বালু উত্তোলন, হুমকিতে সেচ প্রকেল্পর বাঁধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁদপুর
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ১৮:০৯
-68a4698a56bcc.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড় ঘেঁষে আবারও অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন হচ্ছে। এতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে মেঘনা-ধনাগোদা বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেচ প্রকল্পের ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। গত কয়েক মাস ধরে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন চলছে, তবু প্রশাসন এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে উপজেলার মেঘনা নদীর উপকূলীয় দশানি, ষাটনল, নাছিরা কান্দি ও বোরচর এলাকায় প্রকাশ্যে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বালু সন্ত্রাসী কিবরিয়া মিয়াজি ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে। এই ধরনের সংঘর্ষে একাধিক ব্যক্তি গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন, এবং এসব ঘটনায় এখনও মামলা চলমান।
দশানি গ্রামের মাজেদুর রহমান বলেন, ‘দিনরাত মেশিন বসিয়ে বালু তুলছে। নদীর পাড় ধসে আমাদের ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। অথচ কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘প্রশাসনকে বারবার জানালেও কোনো ফল পাইনি। মনে হয় বালু সিন্ডিকেটের কাছে প্রশাসন জিম্মি।’
‘মাটি ও মানুষ’ নামে মতলবের পরিবেশবাদী সংগঠনের পরিচালক শামীম খান বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন অবৈধভাবে ড্রেজার চলছে। এটি শুধু নদী ভাঙন বাড়াচ্ছে না, বরং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি।’
মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জানান, মূলত মুন্সিগঞ্জ এলাকায় প্রশাসন অনুমোদন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। নৌ পুলিশ অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে তৎপর।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ‘উপজেলার সীমানায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত নদীতে অভিযান চালাচ্ছি।’
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ঘটনাস্থলে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। অচিরেই যৌথ বাহিনীর একটি অভিযান পরিচালনা করা হবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কেউ পার পাবে না। বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে লাখো মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এআরএস