Logo

সারাদেশ

কালীগঞ্জে সড়ক সংস্কারকাজ দখলের অভিযোগ, ঠিকাদারকে প্রাণনাশের হুমকি

Icon

মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট, লালমনিরহাট

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৩৮

কালীগঞ্জে সড়ক সংস্কারকাজ দখলের অভিযোগ, ঠিকাদারকে প্রাণনাশের হুমকি

সোমবার দুপুরে ইউএনও জাকিয়া সুলতানা রাস্তা দুটি পরিদর্শন করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। ছবি : বাংলাদেশের খবর

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে দরপত্র প্রক্রিয়াধীন থাকা দুটি সড়ক জোরপূর্বক দখল করে কাজ শুরু করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় নেতাদের দাবি, কাজ ছেড়ে দিতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৩.০৯ কিলোমিটার এবং চলবলা ইউনিয়নের ৫.২৫ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৩ কোটি ৯১ লাখ ১৬ হাজার ৫১৯ টাকা এবং ৫ কোটি ৮৭ হাজার ৬০৭ টাকা।

দরপত্র অনুযায়ী চন্দ্রপুরে ‘মোহাম্মদ ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং চলবলায় ‘বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’ কাজ পায়। তারা পারফরম্যান্স সিকিউরিটি বা কার্যসম্পাদন জামানত জমা দিয়েছেন। চুক্তিপত্র তৈরি হওয়ার পর কার্যাদেশ পেলে কাজ শুরু করার কথা ছিল।

কিন্তু ইতোমধ্যে স্থানীয় নেতারা রাস্তাগুলো দখল করে কাজ শুরু করেছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটির পক্ষ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলীকে পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

চলবলা ইউনিয়নের দুহুলী-জোরগাছ সড়কের অভিযোগে বলা হয়েছে, কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য নানা হুমকি দেওয়া হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ৭ আগস্ট রাস্তাটি দখল করে মাটি কাটা শুরু করা হয়। এ ঘটনায় আফজাল হোসেন, আদিতমারীর পলাশী ইউনিয়নের হামিদুল ইসলাম ও সাহাদাত হোসেনের নাম উল্লেখ রয়েছে।

চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বুড়িরহাট-চন্দ্রপুর সড়কের কাজের বিষয়ে অভিযোগে বলা হয়, হামিদুল ১৫ আগস্ট থেকে জোরপূর্বক মাটি কাটা শুরু করেছেন।

উভয় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিইডির কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী গত রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) চিঠি দেন। সোমবার দুপুরে ইউএনও জাকিয়া সুলতানা দুটি রাস্তা পরিদর্শন করে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।

চন্দ্রপুরে ঘটনাস্থলে হামিদুলের ছোট ভাই শাহীনকে পাওয়া গেছে। তিনি জানান, ‘হামিদুল ভাই ও আফজাল ভাইয়ের কাজের তদারকি করছি মাত্র।’

শ্রমিক হরিকান্ত বলেন, ‘ঠিকাদার হামিদুল ভাইয়ের নির্দেশে কাজ করছি। হামিদুলের ছোট ভাই তদারকি করছেন।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্সের নির্বাহী পরিচালক এলাহী বকস বলেন, ‘নির্বাহী প্রকৌশলী চুক্তিপত্র শেষে কার্যাদেশ দিলে আমরা কাজ শুরু করব। কিন্তু এরই মধ্যে রাস্তাটি দখল করা হয়েছে। জেলাটির একজন নেতা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারপিটসহ হত্যার হুমকিও দিয়েছেন।’

বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশনের পক্ষে শাহ আযম জানান, ‘আফজাল, হামিদুল ও সাহাদাত কাজ থেকে সরে যেতে হুমকি দিয়েছেন। সরে না যাওয়ায় জোরপূর্বক কাজ শুরু করেছেন। আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

হামিদুল নিজে বলেন, ‘আমি কোনো কাজ করি না।’ অপরদিকে আফজাল হোসেন দাবি করেছেন, ‘আমার নাম ভাঙানো হচ্ছে, আমি ওই রাস্তায় যাইনি। প্রকৌশলীদের কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হাবীবুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে মাঠকর্মীদের পাঠিয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও সফল হইনি। পরে উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবগত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।’

ইউএনও জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। পরে থানা-পুলিশকে অবৈধ দখলদারদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছি। গ্রেপ্তার হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এলজিইডির লালমনিরহাট নির্বাহী প্রকৌশলী কাওছার আলম বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করিনি। চুক্তিপত্র ও কার্যাদেশ ছাড়া কাজ করা অবৈধ।’

রাহেবুল ইসলাম টিটুল/এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

দুর্নীতি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর