Logo

সারাদেশ

কোটি টাকার শিশুপার্ক এখন জঙ্গল

Icon

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৪৬

কোটি টাকার শিশুপার্ক এখন জঙ্গল

ছবি : বাংলাদেশের খবর

গাজীপুরের কালীগঞ্জ শহরে শিশুদের বিনোদনের জন্য প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একমাত্র শিশু পার্কটি আজ অবহেলায় জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ২০২৩ সালে নির্মিত এই পার্কটি উদ্বোধনের পরও কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে সম্ভাবনাময় পার্কটি এখন অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা রাজধানী ঢাকার অদূরে হলেও দীর্ঘদিন শিশুদের বিনোদনের কোনো সুযোগ ছিল না। সেই শূন্যতা পূরণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে দরিসোম গ্রামে সরকারি খাদ্যগুদাম সংলগ্ন খাস জমিতে নির্মাণ করা হয় ‘কালীগঞ্জ উপজেলা শিশুপার্ক’। 

তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আজিজুর রহমানের পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা পার্কটি ২৫ ডিসেম্বর ওই বছরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও জেলা পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম উদ্বোধন করেন। তবে ইউএনও বদলির পর পার্কটির তদারকি হয়নি। রাজনৈতিক পরিবর্তনের অস্থিরতার মধ্যেই থমকে যায় পার্ক পরিচালনার উদ্যোগ।

শিশু পার্কে বসানো হয়েছিল স্লাইডার, দোলনা, বিভিন্ন রাইড, বসার স্থান, বেঞ্চ, টিকিট কাউন্টার, ‘গ্রীন-গ্রেস’ নামে একটি শপ হাউজ, এমনকি ঘোড়া ও মুরগির ভাস্কর্যও। কিন্তু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব খেলনা ও সরঞ্জাম এখন অকেজো। শিশুদের খেলার সামগ্রী মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সরকারি হিসাবে, পার্ক নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ৪১১ টাকা, যা তিন দফায় খরচ করা হয়। এর মধ্যে ১ম দফায় ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার ৪২৭ টাকা, ২য় দফায় ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৪ টাকা এবং ৩য় দফায় ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের অদূরে থাকা পার্কের বেহাল দশা সবার চোখে পড়লেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, “প্রশাসন কি এ অবস্থাটা দেখছে না, নাকি না দেখার ভান করছে? আমরা চাই দ্রুত পার্কটি পরিষ্কার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।”

পার্কের ব্যয় সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল বলেন, ‘আমি মোট ব্যয় ছাড়া অন্য কোনো তথ্য দিতে পারব না। অতিরিক্ত তথ্য চাইলে তথ্য অধিকার ফর্মে আবেদন করতে হবে।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, ‘শিশুপার্কটি এখন প্রায় বন-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব পার্কটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে একজন ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা করছি, কিন্তু এখনো কাউকে পাওয়া যায়নি। আশা করছি শিগগিরই ঠিকাদার নিয়োগ সম্ভব হবে। এরপর পার্কটি সুষ্ঠুভাবে চালু করা যাবে।’

  • রফিক সরকার/এমআই
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর