মিঠাপুকুরে হাসপাতালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও খাবারের মান নিয়ে উদ্বেগ

রাখিবুল হাসান, মিঠাপুকুর (রংপুর)
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২১:৫৪
-68ac871f118bf.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের জন্য পরিবেশিত খাবারের মান ও হাসপাতালের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। রোগী ও স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, প্রতিদিনের খাবার পুষ্টিহীন, স্বাদহীন এবং নিম্নমানের। ফলে চিকিৎসাধীন রোগীরা সঠিক পুষ্টি না পাওয়ায় সুস্থ হতে বিলম্ব হচ্ছে।
মিঠাপুকুর উপজেলা দেশের বৃহত্তম উপজেলাগুলোর মধ্যে একটি। ১৭টি ইউনিয়ন, ৩১০টি মৌজা ও ৩১৩টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই উপজেলার জনসংখ্যা ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬৮৬ জন। চিকিৎসা সেবার চাহিদা বিবেচনায় হাসপাতালটি যথেষ্ট নয়। আধুনিক সরঞ্জাম ও পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সীমিত।
রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালের অভ্যন্তরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। শৌচাগার ও ওয়ার্ডগুলোতে পরিচ্ছন্নতার অভাব, নোংরা পানি জমে থাকা এবং দুর্গন্ধ রোগীদের চরম দুর্ভোগে ফেলছে। বেডের অভাবে অনেক রোগী ফ্লোরে শুয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
রোগীর স্বজন মণ্টু মিয়া বলেন, ‘খাবারের মান এতোটাই খারাপ যে মুখে তোলা কষ্টকর। বাধ্য হয়ে খেতে হয়। তরকারিতে কোনো মসলা, রসুন-পেঁয়াজ নেই। মাছকে রুই মাছ বলে পরিবেশন করা হয়, মাংসও নিম্নমানের।’
জোবেদ আলী ও ময়েনউদ্দীন জানান, ‘ভাতের মান খুব খারাপ, তরকারিতে লবণ, তেল, মরিচ বা আদা-রসুন ঠিক মতো নেই। এই খাবার খেলে আমরা আরও অসুস্থ হয়ে যাই।’
সিদ্দিকা নামে একজন মহিলা বলেন, ‘দুদিন ধরে স্বামীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আছি, কিন্তু খাবার পাইনি। রেজিস্টার করা রোগী হওয়া সত্ত্বেও আমাদের উপেক্ষা করা হচ্ছে।’
রেহেনা বেগম অভিযোগ করেন, ‘নতুন ভর্তি হলেও তিন দিন পর্যন্ত কোনো খাবার দেওয়া হয়নি।’
হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী শাহাজাহান আলী বলেন, ‘যদি খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ থাকে, আমরা চেষ্টা করব তা উন্নত করতে। সাধারণত খাবার ‘মেডিয়াম’ স্বাদের হয়ে থাকে, খুব ঝাল বা অতিরিক্ত লবণ নেই।’
আবাসিক অফিসার ডা. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। ৫০ শয্যার হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সব রোগীকে বরাদ্দকৃত খাবার দেওয়া সবসময় সম্ভব হয় না। অতিরিক্ত রোগীদের জন্য মেডিকেল প্রশাসন দপ্তর ব্যবস্থা করে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অফিসার ডা. রাশেবুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ডিসি অফিসের মিটিংয়ে আছি, পরে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলব।’
এই অভিযোগগুলো তুলে ধরে রোগীরা দাবি করেছেন, সরকারের বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও খাবারের যথাযথ মান ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। তারা স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ চাচ্ছেন।
এআরএস