চায়ের দোকানে স্বপ্ন আর টিকে থাকার লড়াই শিখা রানীর

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৪০
-68ad8f15e9ae4.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকায় বসবাসকারী শিখা রানী দে একজন বৃদ্ধা নারী। তিনি পেশায় চায়ের দোকানদার। প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তিনি ছোট্ট চায়ের দোকান চালান। দোকানে দৈনিক প্রায় দুই হাজার টাকা বিক্রি হলেও এর থেকে যা লাভ আসে তা দিয়ে চার সদস্যের পরিবারে চলানো কঠিন না।
স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শিখা রানীর সংগ্রামের জীবন শুরু। তিন কন্যা ও এক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে তিনি অতি কষ্টে দিনযাপন করছেন। ছেলে শারীরিক অক্ষমতার কারণে দোকানে তেমন সাহায্য করতে পারছেন না, আর মেয়েরা কেউ স্থায়ীভাবে উপার্জন করতে সক্ষমও নয়।
তাদের বসবাস ঠাকুরপাড়া মসজিদের সামনে একটি ভাড়া বাসায়। প্রতিমাসে বাসা ভাড়া দিতে হয় ৭ হাজার ৪০ টাকা। দৈনিক প্রায় দুই হাজার টাকা করে মাস শেষে বিক্রি প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এর থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে খাবার, ওষুধ, সন্তানদের প্রয়োজন ও ভাড়া মেটাতে গিয়ে প্রতিমাসেই পড়ে যান ঘাটতির মুখে।
চায়ের দোকানে নেই বৈদ্যুতিক সংযোগ। গরমের দিনে ঠাণ্ডা পানীয় বিক্রি করা তো দূরের কথা, সন্ধ্যার পর আলো না থাকায় দোকানও বন্ধ রাখতে হয়। ফলে অনেক সম্ভাব্য গ্রাহক হারাতে হয়।
তবুও শিখা রানী দে হাল ছাড়েননি। তার স্বপ্ন একদিন ছোট্ট চায়ের দোকানটি বড় করা এবং সন্তানদের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যত গড়ে তোলা। তিনি বলেন, ‘আমি তো আর চাই না রাজপ্রাসাদে থাকি। শুধু চাই আমার ছেলেমেয়েদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’
এই সাহসী নারী এখন স্থানীয় প্রশাসন এবং সমাজের সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের সহায়তার অপেক্ষায় আছেন। তিনি চান ন্যূনতম জীবনযাপনের মৌলিক চাহিদা যেন পূরণ হয়। আলোহীন চায়ের দোকান নয় বরং প্রতিটি সকালে তার জীবনে আশা হয়ে উঠুক নতুন আলো।
এআরএস