Logo

সারাদেশ

বেপরোয়া আরাকান আর্মি : ২২ দিনে ৫৬ জেলে অপহৃত, টেকনাফে আতঙ্ক

Icon

ইব্রাহীম মাহমুদ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৪১

বেপরোয়া আরাকান আর্মি : ২২ দিনে ৫৬ জেলে অপহৃত, টেকনাফে আতঙ্ক

ছবি : বাংলাদেশের খবর

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে টানা ১১ মাসের সংঘাতের পর গত বছরের আগস্টে রাখাইনের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর মংডু দখল করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এরপর থেকে নাফ নদীর জলসীমা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তারা।

স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছে, এই অঞ্চলে তাদের দৌরাত্ম্য ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে গত ২২ দিনে সাতটি নৌকা থেকে মোট ৫৬ জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।

জেলে পল্লীর বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগস্টের ৫ তারিখের পর থেকে আরাকান আর্মির কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। এতে স্থানীয় জেলেরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

সম্প্রতি মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীসহ আরও কয়েকটি স্বশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। এরপর থেকে নাফ নদীর সীমানা ও সাগরে তাদের তৎপরতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অপহৃত জেলেদের পরিবার জানে না, তারা জীবিত আছেন কি মারা গেছেন।

স্থানীয়রা জানান, মংডু শহর আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর থেকে নাফ নদী ও সাগরে তাদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি জেলেরা প্রায়ই তাদের হাতে আটক হচ্ছে। চলতি মাসের ৫ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত সাতটি নৌকা থেকে ৫৬ জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। পরিবারগুলো এখন দিশেহারা। বিভিন্ন মাধ্যমে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত কিছু পেজে আটককৃতদের ছবি প্রকাশিত হওয়ায় পরিবারগুলো আটক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছেন।

শাহ পরীরদ্বীপ মাঝের পাড়া এলাকার হাবিবা বেগম জানান, ‘৫ আগস্টে আমার স্বামী মো. আমিন নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। পরে খবর পাই নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে আরাকান আর্মির সদস্যরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নৌকাসহ ১২ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও ফেরত আসেনি। আমার স্বামী ঘর-সংসারের খরচ জোগাড় করতেন। এখন একদিকে স্বামী নেই, অন্যদিকে সংসারে চলছে দুঃখ-দুর্দশা। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে সংসার চালানো অত্যন্ত কষ্টকর। আমি চাই আমার স্বামীকে ফেরত আনা হোক।’

শাহ পরীরদ্বীপ ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাঝি বলেন, ‘নাফ নদী ও সাগর থেকে আগস্টে সাতটি ট্রলারসহ ৫৬ জেলেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে। বিষয়টি আমরা কোস্ট গার্ড, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও আটকরা ছাড়া পায়নি। নাফ নদী ও সাগরে আরাকান আর্মির দৌরাত্ম্য বাড়ছে, যা জেলেসহ টেকনাফবাসীর জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে জানি, মাছ ধরার পথে জেলেরা প্রায়ই আরাকান আর্মির হাতে আটক হচ্ছে। শাহ পরীরদ্বীপ ও নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় বারবার সমস্যা হচ্ছে। জেলেদেরকে এসব এলাকা দিয়ে চলাচল করতে সতর্ক থাকতে হবে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।’

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বিজিবি বঙ্গোপসাগর

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর