-68b40f5558327.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় শনিবার (৩০ আগস্ট) গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে। রঘুনাথপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে নবীন যুব সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম।
ষাঁড়ের লড়াই ঘিরে সকাল থেকেই মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ের মাঠের চারপাশ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। কেউ স্কুলের বারান্দায়, কেউ বাড়ির ছাদে আবার কেউ গাছে উঠে লড়াইটি উপভোগ করেন। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্করাও অংশ নেন। প্রতিযোগিতায় আড়পাড়া, যাদবপুর, শোলপুর, মির্জাপর, পেড়লীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩০টি ষাঁড় অংশ নেয়।
মির্জাপুর থেকে আসা সুবুদ্ধি বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা গ্রাম থেকে নসিমন যোগে ১৫ জন একসাথে ষাঁড়ের লড়াই দেখেছি। এর আনন্দ আলাদা। যদি বৃষ্টি না হত, আরও সুন্দরভাবে প্রতিযোগিতা উপভোগ করা যেত।’
আয়োজকদের মতে, গ্রাম বাংলার মানুষের বিনোদন ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক এই ষাঁড়ের লড়াই। ‘আমাদের এই পুরনো ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা উচিত যাতে এটি আগামি প্রজন্মের কাছে জীবন্ত থাকে। ষাঁড়ের লড়াই শুধুই একটি খেলা নয়, এটি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ,’ বললেন আয়োজক হাসিফ শেখ।
তিনি আরও জানান, ‘আগে বিভিন্ন মেলা, উৎসব ও বিশেষ উপলক্ষে এই লড়াই আয়োজন করা হতো। বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে আমরা এটি আয়োজন করতে পারিনি। জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে এবার আয়োজন করা হলো। আমাদের চেষ্টা থাকবে, আগামি প্রজন্ম এটিকে ধরে রাখবে। গ্রামের সকলে একসাথে বিনোদন উপভোগ করতে পারবে—এই লক্ষ্যেই আয়োজন।’
নবীন যুব সংঘের সভাপতি ও ষাঁড়ের লড়াইয়ের আয়োজক মো. সায়েবুজ্জামান তোহা বলেন, ‘গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে এই আয়োজন করা হয়েছে। বিপুল দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখিয়ে দিচ্ছে, মানুষ এখনও ঐতিহ্যের প্রতি আকৃষ্ট। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে এ এলাকার মানুষ এ ধরনের সুন্দর আয়োজন করতে পারেনি। আগের সরকারের সময়ে মানুষের বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। জারি গান, এড়ে লড়াই, নৌকা বাইচ, ঘোড়দৌড়—সব বন্ধ ছিল। এখন জনগণের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ ধরনের অনুষ্ঠান আগের মতো হয়ে উঠেছে।’
কৃপা বিশ্বাস/এআরএস