ভাঙা টিনশেড ঘরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধা ফজিলা বেগম

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:২৩
-68b6b795bd515.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
বৃষ্টি নামলেই ভাঙা টিনশেড ঘরে পানি পড়ে, রাতে শোবার জায়গা নেই। ৬০ বছর বয়সী ফজিলা বেগম ঘুমাতে পারেন না, কখনো দু’মুঠো খাবার জোটে, আবার কখনো না খেয়েই কাটে দিন। জীবনের শেষ প্রহরে পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। ভাঙা ঘরেই এক প্রতিবন্ধী ছেলে ও ছোট্ট নাতনিকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
ফজিলা বেগম টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মরহুম ওমর ফারুকের স্ত্রী। স্বামী মারা গেছেন এক যুগেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে। তিন ছেলের মধ্যে বড় ও মেঝো ছেলে আগেই মারা গেছেন। ছোট ছেলে জুয়েল জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। নাতনী জান্নাতকে (১০) নিয়ে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরই তার শেষ আশ্রয়।
ফজিলা বেগম জানান, ২২ বছর ধরে এই ভাঙা ঘরেই আছেন। ছাদে মরিচা ধরে ছিদ্র হওয়ায় বৃষ্টি এলে ঘরে পানি পড়ে। মানুষের দেওয়া খাবার দিয়ে কোনোরকম বেঁচে আছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, চার বছর আগে মারা যাওয়া মেঝো ছেলের রেখে যাওয়া একমাত্র মেয়ে জান্নাতকে স্থানীয় মাদরাসায় ভর্তি করেছেন। কিন্তু নিজের অসহায়ত্বের কারণে কখনো তাকে পছন্দের খাবার বা পোশাক কিনে দিতে পারেননি।
সম্প্রতি (৩১ আগস্ট) রাতে তার ঘর থেকে কিছু চাল ও মোবাইল চুরি হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে চেয়ে কিছু টাকা দিয়ে যে চাল কিনেছিলেন, সেটিও চলে গেছে।
স্থানীয়রা বলেন, ফজিলা বেগম সত্যিই অসহায়। সংসারে উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয় তাকে। নতুন ঘর করার সামর্থ্য নেই। সরকার বা কোনো ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান পাশে দাঁড়ালে অন্তত শেষ বয়সে কিছুটা শান্তিতে বাঁচতে পারবেন।
কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মামুন সিকদার বলেন, ফজিলা বেগম ভাঙা ঘরে কষ্টে আছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, তার বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ঘর নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল রনীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
মুহাম্মদুল্লাহ/এআরএস