বাঁকখালীতে উচ্ছেদ অভিযানে হামলায় পুলিশ সদস্য আহত, আটক ৪

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৩৩
-68b6b9fcecaa0.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে প্রশাসনকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার শহরের কস্তরাঘাট এলাকায় বাঁকখালী নদীর মোহনায় পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্য মো. করিম পুলিশ লাইন্স কক্সবাজারে কর্মরত রয়েছেন।
সকালে জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ যৌথভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করলে স্থানীয়রা বাঁধার মুখে পড়ে। ‘বদরমোকামস্থ উকিলপাড়া সমাজের সর্বস্তরের জনসাধারণ’ ব্যানারে তারা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে।
স্থানীয় এক নারী সাংবাদিকদের জানান, তাদের ক্রয়কৃত জমি নদী উদ্ধারের নামে জবরদখল করা হচ্ছে। প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাঁকখালী উচ্ছেদ অভিযানে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পরিস্থিতি কিছুক্ষণের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসায় প্রশাসন আবার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে। দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী আতিকউল্লাহ প্রকাশ সিআইপি আতিকের দখলকৃত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট বাঁকখালী নদীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে চার মাসের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।
গত ৩০ আগস্ট নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন কক্সবাজার সফরে এসে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার নির্দেশনা দেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশে নদী দখলমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ জানায়, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাঁকখালী নদীর ৭২১ একর জমি নদীবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং জেলা প্রশাসনকে এটি বিআইডব্লিউটিএর কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই জমির কমপক্ষে ৩০০ একরে এখনও অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে কমপক্ষে দুই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযান আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
ইমতিয়াজ মাহমুদ ইমন/এআরএস