Logo

সারাদেশ

বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতিতে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Icon

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৫০

বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতিতে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এক আদম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিদেশে ভালো বেতনের চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার বানা ইউনিয়নের গড়ানিয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে শামিম আহমেদ (৩০) নিজেকে আদম ব্যবসায়ী পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে সামকো নামে একটি এজেন্সির মালিক দাবি করেন। রাজধানীর ভাটারা বারিধারা জে ব্লকে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান। এই এজেন্সির নাম করে শামিমের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজনকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাউকেই বিদেশে পাঠাতে পারেননি তিনি। বরং ভুয়া ভিসা, কোর্সের জাল সনদ, ওয়ার্ক পারমিট ও বিমানের টিকিট ধরিয়ে দিয়ে প্রতারণা করেন। তার প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী একটি পরিবার শামিমের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। 

জানা যায়, গত ২০২৪ সালে শামিমের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া পাঠানোর নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সিরাজুল ইসলাম মিরন নামে এক ভুক্তভোগী আদালতে একটি মামলা করেন। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলামকে বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কয়েক ধাপে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন শামিম। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাকে বিদেশ নিতে পারেননি। পরবর্তীতে সে টাকা ফেরত চাইলেও দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর বাধ্য হয়ে তিনি খুলনা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আমলী আদালতে শামিমসহ তার পরিবারের আরও তিন সদস্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শামিমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মোহাম্মদ দিদার নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমাকে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে। সব ডকুমেন্ট জাল বলে পরে জানতে পারি। এখন ফোন ধরছে না, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।'

আবু বক্কর সিদ্দিক নামে অপর এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমাকে মালয়েশিয়া পাঠানোর নাম করে শামিম আমার নিকট থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। কিন্ত প্রায় এক বছরেও তিনি বিদেশে নিতে পারেননি। আমার টাকাও ফেরত দেয়নি। এখন তার অফিস বন্ধ। শুনেছি বাড়ি থেকেও পালিয়েছে। পরে বুঝতে পারি তিনি বড়মাপের একজন প্রতারক।’

মিলন হোসেন, মোহাম্মদ ইকবাল ও কৃষ্ণ কুমার দাশ নামে একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, আমরা বিদেশে যাবার জন্য শামিম হোসেনকে টাকা দিই। কিন্তু তিনি আমাদের কাউকেই বিদেশে নিচ্ছেন না। আমরা সবাই কমপক্ষে দুই বছর ধরে ভুক্তভোগী। আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল, বিদেশে গিয়ে পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনব। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে না। এই প্রতারকের কথায় আমরা কমপক্ষে ৫০ জনের বেশি মানুষ ফাঁদে পড়েছি। কম করে হলেও এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সে এখন লাপাত্তা। আমরা পাওনা টাকা ফেরত চাই, পাশাপাশি প্রতারক শামিমের বিচার চাই।

এদিকে অভিযুক্ত শামিম আহমেদ গাঁ-ঢাকা দেওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজালাল আলম বলেন, ‘শামিম আহমেদের বিরুদ্ধে একটি গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্টের কপি পেয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাকিবুল/এইচকে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর