সেপ্টেম্বরের শুরুতেই উঁকি দিল কাঞ্চনজঙ্ঘা, তেঁতুলিয়ায় বেড়েছে পর্যটক

এসকে দোয়েল, পঞ্চগড়
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:০২
-68b94779ac40f.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। হিমালয় পর্বতমালার এই বরফঢাকা শৃঙ্গ নেপাল-সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াই বাংলাদেশের মাটি থেকে এর সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ মেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে চলতি বছর সেপ্টেম্বরের শুরুতেই পরিষ্কার আকাশে দেখা মিলেছে কাঞ্চনজঙ্ঘার। ১ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার থাকায় স্থানীয়রা স্মার্টফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এমন দৃশ্য সেপ্টেম্বরের শুরুতেই দেখা যাবে—এটা আশা করেননি কেউ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এসব ছবি-ভিডিও দেখে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা তেঁতুলিয়া আসতে যোগাযোগ শুরু করেছেন ট্রাভেল এজেন্সি ও হোটেল-রিসোর্টের সঙ্গে।
শরৎ, হেমন্ত ও শীত মৌসুমে সবচেয়ে ভালো দেখা যায় এই শ্বেতশুভ্র শৃঙ্গ। ভোরের আলো ফুটতেই ধীরে ধীরে উঁকি দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। কখনো রোদে সোনালি, কখনো রক্তিম, কখনো কমলা রঙে ঝলমল করে। তবে সবসময় দেখা মেলে না। মেঘ আর কুয়াশা মাঝে মাঝেই আড়াল করে রাখে তাকে। এজন্য অনেকে বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য কপালও লাগে।
তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো, মহানন্দা, ভেরসা, করতোয়া, ডাহুক নদীর পাড়সহ নানা স্থান থেকে ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে এক কাপ গরম চা হাতে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখাই এখানকার ঐতিহ্য। স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকরা এই সৌন্দর্য উপভোগে ভিড় জমান।
এই শৃঙ্গের উচ্চতা ২৮ হাজার ১৬৯ ফুট বা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার। ১৮৫২ সালের আগে এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বলেই মনে করা হতো। বর্তমানে এটি বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। তেঁতুলিয়া থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার।
কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে নেমে এসেছে চারটি নদী, যেগুলো বাংলাদেশের পঞ্চগড় দিয়ে প্রবাহিত। এই হিমালয়ি জলের ধারা স্থানীয় পানিকে করেছে সুপেয় ও স্বচ্ছ।
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ এলাকায় পর্যটকদের ঢল নামে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আবাসিক ব্যবস্থা, রিসোর্ট, চা বাগানভিত্তিক কটেজসহ নানা সেবা গড়ে উঠেছে। এতে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানও বাড়ছে।
তেঁতুলিয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম জানিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘাকে কেন্দ্র করে দিন দিন নতুন আবাসিক ও পর্যটনসেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। পর্যটন মৌসুমে হোটেল-রেস্তোরাঁ, ভ্যানচালকসহ স্থানীয় সেবাখাত জমজমাট হয়ে ওঠে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘তেঁতুলিয়া দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বক্ষণ কাজ করছি। যোগাযোগের নম্বরও বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ করা হয়েছে।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা যেন নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
এআরএস