৮ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:১২
-68bd5a7592a34.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোর ওপর নিয়মিত চলাচল করছে। আটটি গ্রামের একমাত্র ভরসা এই সাঁকো হলেও প্রতিনিয়ত সেখানে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, গত তিন বছর ধরে ঝুঁকি স্বীকার করে তারা এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছেন। আগে এখানে একটি কাঠের সেতু ছিল, তবে তা ভেঙে যাওয়ার পর মানুষদের চলাচলের একমাত্র উপায় হয়ে গেছে এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো। ইতোমধ্যেই অনেকেই পড়ে আহত হয়েছেন। এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সাঁকো ব্যবহার করে চলাচল করা আটটি গ্রাম হলো– বালাটারী, চন্দ্রখানা, জেলেপাড়া, কুমারপাড়া, বামনটারী, আবাসন, বৈরাগিপাড়া ও দাশিয়ারছড়া। এতে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন।
বালাটারী চন্দ্রখানা গ্রামের এহসান আলী (৬০) বলেন, ‘গত এক বছর আগে আমার ছেলে আতিকুর রহমান (৩৬) সাঁকো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এক মাস চিকিৎসার পর তার মৃত্যু হয়। আমি নিজেও দুইবার এই সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছি। প্রতিশ্রুতি পাই, কিন্তু সেতু পাই না। কবে স্থায়ী সেতু হবে, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।’
স্থানীয় কলেজছাত্র ফারুক হোসেন (১৯) জানান, ‘এক সপ্তাহ আগে আমি পড়ে গিয়ে আহত হই। মোবাইলও ভেঙে গেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এখানে। আগে কাঠের সেতু থাকায় নিরাপদে চলাচল করতে পারতাম।’
কৃষক আক্তার আলী (৫৮) বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমরা নিজেই বাঁশ দিয়ে সাঁকো বানাই। প্রতিবছর আমি প্রায় ৫০–৬০টি বাঁশ দিই, বাকিরা শ্রম দেয়।’
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, ‘আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। নীলকমল নদীর ওপর ১২০ মিটার সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, ‘গ্রামের লোকজনের আপাতত চলাচলের জন্য বাঁশ-কাঠের সাঁকো নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি স্থায়ী সেতু নির্মাণের প্রস্তাব এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে।’
ফজলুল ফরাজী/এআরএস