বাগেরহাটে ৪টি আসন পুনর্বহালের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা, সোমবার হরতাল

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১৭

গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি করার চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের প্রতিবাদে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলসহ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সর্বদলীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কমিটির কো-কনভেনর এম এ সালাম, জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস আলী, বিএনপি নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, ব্যারিষ্টার জাকির হোসেন, খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, খান মনিরুল ইসলাম ফরাজি, ফকির তারিকুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম গোড়া, নাসির আহমেদ মালেক এবং জামায়াত নেতা মঞ্জুরুল হক রাহাত।
ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী, আজ বিকেলে ৯টি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভায় বিক্ষোভ, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপি হরতাল, ৯ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ মিছিল, ১০-১১ সেপ্টেম্বর আবারও হরতাল অনুষ্ঠিত হবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, শিক্ষার্থীদের বহনকারী গাড়ি ও জরুরি সেবার যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।
জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি খান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জনমানুষের দাবি উপেক্ষা করে এই আসন বিন্যাস করেছে। গণমানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। যদি নির্বাচন কমিশন চারটি আসন ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে আন্দোলন কঠোর আকার নেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত গেজেটের পর থেকে আমরা রাজপথে ছিলাম। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এরপরও নির্বাচন কমিশন আমাদের আগ্রহকে গুরুত্ব দেয়নি। তারা অবিবেচনাপূর্ণভাবে একটি আসন কমিয়েছে।’
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম জানান, চারটি আসন ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে। এই কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে রিট করবে।
জেলা জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এরপরও যদি কমিশনের বোধদয় না হয়, আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’
বাগেরহাট জেলা বিএনপি যুগ্ন আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার জাকির হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভের পাশাপাশি স্বল্প সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে।’
নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বর্তমান আসনের সীমানা হলো— বাগেরহাট-১ : বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট; বাগেরহাট-২ : কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা; বাগেরহাট-৩ : ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। তখনকার সীমানা ছিল— বাগেরহাট-১ : চিতলমারী, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ : বাগেরহাট সদর ও কচুয়া; বাগেরহাট-৩ : রামপাল ও মোংলা; বাগেরহাট-৪ : মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা।
শেখ আবু তালেব/এআরএস