ছাগলকাণ্ডের মতিউরকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ১১ পুলিশ বরখাস্ত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:১০

ছবি : সংগৃহীত
ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে এক উপ-পরিদর্শকসহ ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত থেকে কিশোরগঞ্জ কারাগারে ফেরানোর পথে মতিউর রহমানকে এক ব্যক্তির সঙ্গে রেস্তোরাঁয় গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর সই করা এক আদেশে ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি জানানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনা ঘটেছে গত ১২ আগস্ট দুপুরে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দনগরে অবস্থিত ‘নিরালা হাড্ডি’ রেস্তোরাঁয়। সেই দিন কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজিরা দেওয়ার পথে খাবারের বিরতিতে ওই রেস্তোরাঁয় যান পুলিশ সদস্যরা। অভিযোগ উঠেছে, তারা উৎকোচ নিয়ে রেস্তোরাঁর একটি কেবিনে এক ব্যক্তির সঙ্গে মতিউর রহমানের গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে একজন এসআই এবং বাকি ১০ জন কনস্টেবল। এসআইয়ের নাম আবুল কাশেম। বাকি কনস্টেবলরা হলেন মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভীর রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস। তাদের সবাইকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের আদেশে বলা হয়েছে, কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকা আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর ফেরার পথে রেস্তোরাঁয় খাবারের বিরতিতে পুলিশ সদস্যরা হাজতি মতিউর রহমানকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে নিজেদের সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন। এটি দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে ধরা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং তারা ঘটনাটি সত্য হিসেবে প্রমাণিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এর ভিত্তিতে জড়িত ১১ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার রিতেশ চাকমা জানান, সাবেক এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে গত ১১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ কারাগারে আনা হয়। এর মধ্যে তাকে তিনবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজিরা দিতে নেয়া হয়। সর্বশেষ ১২ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং একই দিন কিশোরগঞ্জ কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়। পরে ২৬ আগস্ট তাকে কিশোরগঞ্জ থেকে কাশিমপুর-২ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
আব্দুর রউফ ভূইয়া/এমএইচএস