চলনবিলে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল

মেহেদী হাসান তানিম, নাটোর
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮

ছবি : বাংলাদেশের খবর
একসময় আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল নৌকা বাইচ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তপ্রায় হয়ে আসা এই গ্রামীণ উৎসবের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নাটোর জেলা প্রশাসন চলনবিলের গুরুদাসপুরের বিলশা পয়েন্টে আয়োজন করেছে নৌকা বাইচ উৎসব। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় শুরু হওয়া প্রতিযোগিতা দেখতে হাজার হাজার দর্শনার্থী গ্রামের বিলপাড়ে জমায়েত হন।
‘নদী দূষণ রোধ করি, নির্মল বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উৎসবের শুরু থেকেই গ্রাম মুখরিত হয়ে ওঠে। নির্ধারিত দূরত্ব বজায় রেখে বিলের মাঝখানে দুই পাশে থাকা দর্শনার্থীরা নৌকা বাইচ উপভোগ করেন। নৌকার গতি, মাঝি-মাল্লাদের ছন্দোবদ্ধ বৈঠা এবং বাদ্যের তালে দর্শকদের আনন্দকে দ্বিগুণ করেছে।
নাটোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার আজিম আহম্মেদ, ডিআইজি মোহাম্মদ শাজাহান, নাটোরের পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম, গুরুদাসপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ প্রমুখ।
নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা মিলনমেলায় পরিণত হয়। বাড়িতে বাড়িতে অতিথিদের জন্য পিঠা-পায়েসসহ হরেক রকম খাবারের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্য নৌকা বাইচ মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় করছে। এটি নতুন প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ দিয়েছে।
২ কিলোমিটার দূরত্বের নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার ২১টি নৌকা নিবন্ধন করলেও ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের ১২টি নৌকাই অংশ নিতে পেরেছে। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে মোটরসাইকেল জিতেছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির নিউ একতা এক্সপ্রেস। দ্বিতীয় হয়ে রেফ্রিজারেটর জিতেছে শাহজাদপুর উপজেলার নিউ বাংলা। তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে একটি টিভি পেয়েছে আল মদিনা।
উৎসবে অংশ নেওয়া সিংড়ার কতুয়াবাড়ি গ্রামের রকিব বলেন, ‘ক’জন মিলে একটি নৌকা ভাড়া করে নৌকা বাইচ দেখেছি। দুপুরের খাবারও নৌকাতেই খেয়েছি। খুব আনন্দ পেয়েছি।’
বিলশা গ্রামের আফজাল হোসেন বলেন, ‘একসময় প্রতিবছর নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হতো। জেলা প্রশাসনের এই আয়োজনকে স্বাগত জানাই এবং চাই, প্রতিবছর এ ধরনের আয়োজন হোক।’
এআরএস