Logo

সারাদেশ

নারায়ণগঞ্জে দুর্গাপূজায় থাকবে ৪ স্তরের নিরাপত্তা

Icon

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:৫৭

নারায়ণগঞ্জে দুর্গাপূজায় থাকবে ৪ স্তরের নিরাপত্তা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

নারায়ণগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, দুর্গাপূজায় পুলিশের পক্ষ থেকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তিনি বলেন, ‘সাদা পোশাকে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। সার্বক্ষণিক একটি কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে।’

প্রতিটি মন্দির কমিটির সদস্যদের কন্ট্রোল রুমের নাম্বার দেওয়া থাকবে, যাতে তারা পুলিশ সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সদর এলাকায় বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলায় একযোগে ২২২টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। পূজার প্রাকপ্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে, সব মন্দিরে প্রস্তুতি ভালো আছে। উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে সবাই সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।

সরেজমিনে তিনি রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, আমলাপাড়া মন্দির, নিতাইগঞ্জ মন্দির, দেওভোগ মন্দির, নন্দীপাড়া মন্দির ও ৫নং ঘাট বিসর্জন স্থান পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে মন্দির কমিটি ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের পূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনের নির্দেশনা দেন।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তার পিপিএম, তারেক আল মেহেদী, ইসরাত জাহান পিপিএম, নারায়ণগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নাছির আহমদ এবং টিআই (প্রশাসন) মোঃ আবদুল করিম শেখসহ জেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা, বিভিন্ন মন্দিরের পুরোহিত ও পূজারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে নারায়ণগঞ্জ জেলায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। মহালয়া ২১ সেপ্টেম্বর, ষষ্ঠী ২৬ সেপ্টেম্বর এবং দশমী ৩১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির তথ্য অনুযায়ী, এবার নারায়ণগঞ্জে ২২৩টি মণ্ডপে সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর জেলার ২১৩টি মণ্ডপে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপন হয়েছিল।

পুরনো নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ এলাকায় শতাব্দীপ্রাচীন বলদেব জিউর আখড়া শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক। ঊনবিংশ শতকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই আখড়ার পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। মহালয়া ও দুর্গোৎসব উপলক্ষে এখানে আয়োজন হয় বিশেষ পূজা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আখড়ার সেবাইত বলেন, ‘প্রতিবছর মহালয়া উপলক্ষে আমরা এখানে দেবীর আহ্বান করি। ঢাক-ঢোল, শঙ্খধ্বনি ও চণ্ডীপাঠে ভোরের নিতাইগঞ্জ জেগে ওঠে। এই আখড়া নারায়ণগঞ্জের দুর্গোৎসবের প্রাণকেন্দ্র।’

নারায়ণগঞ্জ শিল্প ও বাণিজ্যের শহর হলেও এখানে ধর্মীয় উৎসব সবসময় মিলেমিশে পালন হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলায় দুর্গাপূজার সময় আশপাশের মুসলিম পরিবারও আনন্দে অংশ নেন।

ফতুল্লার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, ‘আমাদের পাড়ায় হিন্দু-মুসলমান একসাথে পূজা উদযাপন করি। প্রতিমা আনতে গেলে আমরা সবাই যাই। বিসর্জনের সময়ও অনেকেই অংশ নিই। এটা আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে।’

নারায়ণগঞ্জ শহরের লক্ষ্মী নারায়ণ আখড়া, শীতলক্ষার ঘাট, কালিরবাজার, চাষাঢ়া, ফতুল্লা, আড়াইহাজার, সোনারগাঁও—সবখানে এখন প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে। বাঁশ, খড়, মাটি ও রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে দেবী দুর্গার মূর্তি। কুমোরপাড়ার শিল্পীরা দিনরাত খেটে প্রতিমা তৈরি করছেন।

এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর