ফেনীর ছাগলনাইয়ায় সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অন্তত শতাধিক মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঋণ বিতরণের কথা থাকলেও দুপুরের দিকে এনজিওটির কর্মীদের আর পাওয়া যায়নি। ফলে উপস্থিত অনেক ভুক্তভোগী হতাশা ও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রতারক চক্র প্রতিষ্ঠানটির নাম দিয়েছেন ‘সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা’। তবে এ সংস্থার বৈধ অনুমোদন বা রেজিস্ট্রেশনের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। ভুয়া সংস্থাটি সাধারণ মানুষের হাতে যে সঞ্চয় বই দিয়েছে তাতে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার উল্লেখ আছে ০৪৩৯/১৯৯০ এবং প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা হিসেবে দেওয়া হয়েছে প্রধান কার্যালয়, ডি-ব্লক, মিরপুর-২, ঢাকা-১২১৬।

ভুক্তভোগীরা জানান, গত দুই দিন ধরে একটি দল এনজিও পরিচয়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে সদস্য সংগ্রহ করছিল। মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে, পাশাপাশি ১১ হাজার টাকা জমা দিলে ১ লাখ টাকার ঋণের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছিল। শর্ত ছিল ঋণ দুই বছরের মধ্যে সহজ কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।

ছাগলনাইয়া পৌরসভার বাঁশপাড়া গ্রামের রত্না বেগম বলেন, ‘১৬ লাখ টাকার ঋণ দেওয়ার কথা বলে ৫৩ হাজার টাকা নিয়েছে।’

রাধানগর ইউনিয়নের মো. টিপু জানান, তার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। জেসমিন জাহান ২২ হাজার, হিছাছরা আনজুম আরা ৬০ হাজার টাকা এবং আরও শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে মোট প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, টাকা নিয়ে প্রতারকরা তাদের থানা পাড়া সামছুল হক ম্যানশনে অফিসে নিয়ে যায়। বিকেল ৪টার দিকে ঋণ বিতরণের কথা থাকলেও অফিসে কেউ উপস্থিত ছিল না। একই এলাকার সুমন বলেন, ‘এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে আমি এখন দিশেহারা।’

গ্রাহকরা এনজিওটির ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরেও একাধিকবার ফোন দিয়েছেন, কিন্তু সবগুলোই বন্ধ পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে আনজুম আরা বেগম বাদী হয়ে ছাগলনাইয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল বাশার জানান, ‘ভুয়া এনজিও খুলে অনেক মানুষ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একজন ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।’

এআরএস