কুষ্টিয়ার গগন হরকরার চুরি হওয়া বল্লভ ও হারিকেন আজও প্রতিস্থাপিত হয়নি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৩৬
-68ca9d3b78c8a.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং নিশান মোড়ে স্থাপিত গগন হরকরার ভাস্কর্যটি এক সময় চিঠি ও ভালোবাসার নিঃশব্দ সাক্ষী ছিল। এক হাতে বর্শা, মাথায় ছোট ঘণ্টা, আর অন্য হাতে আলো জ্বালানো হারিকেন। পিঠে ঝোলানো চিঠিপত্রের ঝুলি যেন প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছে, মানুষের আবেগ ও অনুভূতির এক অনন্য প্রতীক।
এই ভাস্কর্যটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সেই যুগের কথা, যখন ভালোবাসা মানে ছিল অপেক্ষা, আর চিঠি ছিল অনুভূতি প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম। ডাকপিয়ন, খাম আর অসীম অপেক্ষা দিয়েই মানুষ পৌঁছে যেত প্রিয়জনের কাছে।
কুষ্টিয়ার পুরাতন ডাকঘর সেই সময়ের নীরব সাক্ষী। কাঠের জানালা ও ভারী দরজার সেই ভবনটি ধারণ করেছিল মানুষের মনোজগতে ঘটে যাওয়া আবেগ ও অনুভূতির কাহিনি। আজ এখানে আধুনিক ডাকঘর গড়ে উঠেছে—ডিজিটাল ট্র্যাকিং ব্যবস্থা ও শৃঙ্খলিত অফিস কক্ষ সহ। তবে ঐতিহাসিক আবেদন ও আবেগ এখনও রয়ে গেছে।
ডাকঘরের প্রবীণ কর্মীরা স্মরণ করেন, প্রতিদিন অসংখ্য প্রেমপত্র, পারিবারিক খবরাখবর বা বিদেশে থাকা প্রিয়জনের খোঁজ পাঠানো হতো। পোস্টকার্ড, ইনভিলাপ লেটার এবং খামে মোড়া চিঠি ছিল অনুভবের একমাত্র বাহক। আজ আধুনিকতার ছোঁয়ায় ডাকঘর সরকারি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ব্যস্ত। তবে দেয়ালে, করিডোরে এবং কর্মীদের স্মৃতিতে সেই চিঠির দিনগুলো এখনও বেঁচে আছে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, কিছু দুষ্কৃতী রাতবেরাত ঘোরাফেরা করে ভাস্কর্যটির বল্লভ ও হারিকেন চুরি করেছে। পৌর প্রশাসন ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এগুলো লাগিয়েছিল।
কুষ্টিয়ার পৌর প্রশাসক মিজানুর রহমান বাংলাদেশের খবর পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ‘শীঘ্রই চুরি হওয়া বল্লভ ও হারিকেন প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কুষ্টিয়ার এই ডাকঘর কেবল একটি অফিস নয়; এটি একটি সাংস্কৃতিক ও আবেগঘন প্রতীক। নতুন প্রজন্ম আজ মোবাইল স্ক্রিনে আবেগ খুঁজলেও, হাতের লেখা চিঠির মতো আন্তরিক ও চিরস্থায়ী অনুভূতি আর কিছুতেই মেলে না।
আকরামুজ্জামান আরিফ/এআরএস